রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বর। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ৮১ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর চলতি মাসের ১৬ দিনেই ভর্তি হয়েছেন ৭৬৭ জন। এ হিসেবে দিনে গড়ে ৪৮ জনকে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।

এ ছাড়া, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৩৭২ জনকে। এ হিসেবে গত ছয় মাসের দ্বিগুণসংখ্যক রোগী হাসপাতালে গেছেন চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনেই। এটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব। এর বাইরেও অনেকে আছেন, যারা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। করোনার সংক্রমণের মধ্যে ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডেঙ্গু এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোকিপ্টাস মশার মাধ্যমে ছাড়ায়। এপ্রিল থেকে অক্টোবর এই মশার উপদ্রব বাড়ে। সেই হিসেবে ডেঙ্গুজ্বরের মৌসুম এখন। এবার এপ্রিল-মে পর্যন্ত তেমন প্রকোপ দেখা না গেলেও জুন থেকে রোগী বাড়তে শুরু করে। প্রতিনিয়ত অনেকে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের চেম্বারে যাচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশের তীব্র জ্বর হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি প্রয়োজন পড়ে। বাকিরা বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ জন ঢাকা শহরের আর একজন গাজীপুর জেলার। চলতি মাসেই ডেঙ্গু নিয়ে মারা যান দুজন। তাদের মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। ৮০১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ৩৩৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯, মার্চে ১৩, এপ্রিলে ৩, মে মাসে ৪৩, জুনে ২৭২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখন জ্বর হলে কারোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ জ¦রে আক্রান্ত হলে ১ থেকে ৫ দিনের তার মধ্যে ডেঙ্গু এনএস১ পজিটিভ পাওয়া যায় এবং ৫ দিনের পর থেকে আইজিএম/আইজিই পাওয়া যায়। তবে জ্বর হলেই নিজে নিজে ওষুধ সেবন করা যাবে না, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে এখন করোনার প্রাদুর্ভাব। এ সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে। তাই যেসব ডেঙ্গুর রোগীর রক্তের প্লাটিলেট এক লাখের নিচে নেমে আসবে তাদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে এডিশ মশা যেন বংশবিস্তার করতে না পারে, সে জন্য ঘরের ভেতর ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক ডা. আজাদ বলেন, কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। দিনের বেলায় বাসাবাড়িতে মশানাশক স্প্রে করে দরজা-জানালা কিছুক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া মশা নিধনে পদক্ষেপ নিতে হবে সিটি করপোরেশনকেও।

Share.
Exit mobile version