অনলাইন ডেস্ক।। স্বপ্ন সবাই দেখে কিন্তু কজন পারে সেই স্বপ্ন জয় করতে! কজন পারে সেই স্বপ্ন দিয়ে একটি দেশকে বদলে দিতে! সজীব ওয়াজেদ জয়, তিনি স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার মূল কারিগর হিসেবে কাজও করেছেন। জয় একজন বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তথ্য প্রযুক্তি বিষয়টি যখন সারা বিশ্বে কম আলোচিত ছিল তখন সজীব ওয়াজেদ জয় এই বিষয়ের উপর পড়াশুনা শুরু করেন। জয় একজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি।
তিনি বুঝেছিলেন ভবিষ্যৎ বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হবে। সেজন্য নিজেকে তিনি আগামী দিনের বিশ্বের জন্য প্রস্তুত করে ফেলেছেন। যদি এক কথায় প্রকাশ করি তাহলে বলতে পারি, সজীব ওয়াজেদ জয় সমৃদ্ধ আগামীর প্রতিচ্ছবি। আরও কিছু সময় আগে থেকে বললে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, হার্বার্ড থেকে গ্রাজুয়েট একজন স্বপ্নবান তরুণ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান এবং এর বাস্তবায়ন করেন।
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, সেই স্বপ্নবান তরুণের আজ জন্মদিন। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি নিয়ে আসেন তখন অনেকেই মুচকি হেসেছেন, টিপ্পনি কেটেছেন, উপহাস করেছেন। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে পুরো বিশ্ব আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে দিয়েছে। এখন প্রযুক্তি খাতকে কেন্দ্র করে শুধু শহর-অঞ্চল নয়, গ্রামের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের লাখ লাখ উদ্যোক্তা তৈরি করেছে।
পড়াশোনার পর চাকরি না খুঁজে নিজেই নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। মিলিয়ন ডলার আয় করছে স্বপ্ন দেখা এই তরুণ প্রজন্ম। হতাশ তরুণ সমাজে আজ আশার আলো দেখিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি নিজের দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন যেই দেশটি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তির বিষয়ে উৎসাহিত হয়েছেন নিজের সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাধ্যমে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন ‘দিন বদলের সনদ’ শীর্ষক ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিল তখন বিষয়টি অনেকের কাছে অস্পষ্ট ছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশের ব্যাপারে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল, অনেকে রসিকতা করেছিল। প্রধানমন্ত্রীর এই তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা জয় প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়েছিলেন যে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন না হলে কোনো উন্নয়ন টেকসই হবে না। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন ছাড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন তথ্য প্রযুক্তি সেবাকে সারা দেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করে। ইন্টারনেটের দাম কমানো, থ্রি জি-ফোর জি সেবা চালুর মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ নীরবে বিপ্লব ঘটিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন কল্পনা নয়, বাস্তবতা। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন এক বিস্ময়। এ সবই সম্ভব হয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাধ্যমে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, তেমনি আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার হলেন- রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হলেন- সজীব ওয়াজেদ জয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫১তম জন্মদিন আজ মঙ্গলবার। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই অবরুদ্ধ ঢাকায় তার জন্ম। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের পর তার নাম ‘জয়’ রাখেন নানা বঙ্গবন্ধু। মেধা ও তারুণ্যের প্রতীক জয় বাংলাদেশের খ্যাতনামা পরমাণুবিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হওয়ার সময় বাবা এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও মা শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন জয়। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে লন্ডন হয়ে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে যান তিনি। ফলে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ভারতে। সেখানকার নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক শেষ করেন জয়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে স্থায়ীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাস করছেন তিনি।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর রূপকার হিসেবে খ্যাত সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগেই ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণাটি যুক্ত হয়েছিল। দেশের মানুষ এই ধারণা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর গত তিন মেয়াদে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তরুণ এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ লাভের মধ্য দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান জয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করেন তিনি। যা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও বেশ ভালো প্রভাব সৃষ্টি করে। ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর তাকে একই পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নির্বাচিত হন জয়। তিনি ২০০২ সালে ২৬ অক্টোবর মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন। সোফিয়া ওয়াজেদ নামে তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের কারণে জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে সীমিত কর্মসূচি আয়োজিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জয় নিজেও তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতায় যাচ্ছেন না। দেশে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঘরোয়া পরিবেশে জয়ের জন্মদিনের কেক কাটার কথা রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সদস্যরা থাকবেন। দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমান ডিজিটাল প্রযুক্তি :পথিকৃৎ মুজিব হতে সজীব’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করবে। যুবলীগের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ছাড়াও সারা দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়া-প্রার্থনা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজিত হবে। বাংলাদেশের স্বপ্ন জয়ের প্রতীক সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫১তম জন্মদিনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তার দীর্ঘায়ু এবং সুস্থতা কামনা করছি। তার হাত ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক-এই কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।