শাহজাহান সরকার,বিশেষ প্রতিনিধি।।বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গ্লাস এন্ড সিরামিক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম এ মতিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করলেন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ৩০ আগস্ট ভোর রাতে তিনি মারা যান।
মাত্র ৫০ বছর বয়সেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।তার পিতা ছোট সময় রেখে মৃত্যুবরণ করলে তার চাচাজান আব্দুল হাই লেখাপড়ার হার ধরে তাকে মানুষের মত মানুষ হিসাবে গড়ে তোলেন। তাঁর স্ত্রী মেহের নিগার মিম বুয়েটে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
অধ্যাপক ড. এম এ মতিনের বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে। তিনি ১৯৮৬ সালে পাবনার কাশিনাথপুর আব্দুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৮৮ সালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বুয়েটে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপরে ২০০৫ সালে Eindhoven University of Technology- এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত IMEC- তে Reliability and Modeling গ্রুপে পোস্টডক্টরাল সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জাপানের Toyohashi University of Technology তে Intelligent Sensing System নিয়ে রিসার্চ সেন্টারের একজন গবেষক হিসেবেও কাজ করেন। তিনি ২০১২ সালে গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। তাঁর কর্মদক্ষতা ও সততার কারণে পরবর্তীতে তিনি ওই বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তার গবেষণার বিষয়গুলির মধ্যে বিশেষ করে পাতলা ফিল্ম উপকরণ, ফোটোনিক চশমা, ম্যাগনেটোফোটোনিক স্ফটিক, মাল্টি-স্কেল মাল্টি-ফিজিক্স সিমুলেশন উল্লেখ্যযোগ্য।
সোমবার সকাল ৭টায় বুয়েট ক্যাম্পাসে তাঁর প্রথম নামাযে জানাযা শেষে গ্রামের বাড়ি বেড়া উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে আনা হয়। বিকাল ৪ টায় দিঘলকান্দি প্রাইমারী স্কুল মাঠে দ্বিতীয় জানাযার নামাজ শেষে শিমুলিয়া গ্রামে দাফন করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তাঁর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Share.
Exit mobile version