রাঙাপ্রভাত ডেস্ক।। বাংলাদেশে মেট্রোরেল ও বিআরটিসহ কয়েকটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে যে ভয়াবহ জনদুর্ভোগ চলছে কয়েক বছর ধরে তা থেকে আপাতত মুক্তি মিলছে না নাগরিকদের। বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দ্রুত এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করা ছাড়া জনদুর্ভোগ কমানোর আর কোন বিকল্প এ মুহূর্তে সরকারের হাতে নেই। যদিও প্রশ্ন আছে যে, প্রকল্পগুলো প্রণয়নের সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে কোন বিকল্প চিন্তা আদৌ করা হয়েছিলো কি-না।
উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মিরপুরের পল্লবী পর্যন্ত প্রথমবারের মতো গত সপ্তাহে মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচলের উদ্বোধন করে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী বছর নাগাদ এ ধরনের তিনটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। এরপর কর্ণফুলী শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এবং বছর শেষে তরুণ প্রজন্মের ড্রিম প্রজেক্ট এমআরটি লাইন-৬ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করতে পারবেন। মেট্রোরেল এখন আর স্বপ্ন নয়। এটি এখন দৃশ্যমান-বাস্তবতা’। তবে গত কয়েক বছরের বাস্তবতা হলো এসব স্বপ্ন বাস্তবায়নের সময় রীতিমত নাভিশ্বাস উঠেছে প্রকল্প এলাকায় চলাচলকারী মানুষের।
মেট্রোরেলের নির্মাণ শুরু হয়েছিলো ২০১৬ সালে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে নির্মাণ কাজের জন্য মিরপুর থেকে আগারগাঁও-ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি অর্ধেকেরও বেশি অংশ বন্ধ ছিল। ফলে অসহনীয় ভোগান্তি দুঃসহ সময় কাটিয়েছে প্রতিদিন এসব এলাকার লাখ লাখ মানুষ। মিরপুরের অধিবাসী সানজিদা আক্তার বলছেন, এর চেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা তার কাছে আর কিছুই নেই।
‘মিরপুর-১২ থেকে তেজগাঁওয়ে যেতে দুই আড়াই ঘণ্টা লাগতো। ভীষণ জ্যামের মধ্যে যেতে হতো। সারাক্ষণ টেনশনের মধ্যে যাওয়া। রাস্তাও ছিলো এমন যে একদিনে ভাঙাচোরা, আরেকদিকে অর্ধেক নাই বা একদিকে বন্ধ, আরেকদিকে খুলে দিয়েছে-এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে গত কয়েক বছর ধরে’।
এখন আগারগাঁও পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে হওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে সড়কপথ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে, কিন্তু আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অনেক জায়গাতেই সড়ক একাংশ বন্ধ এবং সেগুলো খুলতে সেতুমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছর ডিসেম্বর পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হবে কি-না তা এখনো নিশ্চিত হয়।
তবে মেট্রোরেলের এ রুটের কাজ শেষ হওয়ার লক্ষণ অনেকটা পরিষ্কার হলেও ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাসের আলাদা লেন তৈরির পাঁচ বছরের প্রকল্পের কাজ আট বছর পরে এসেও হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ। এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের কারণে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত পুরো সড়ক সরু হয়ে অর্ধেকেরও কম অংশে যান চলাচল করতে পারছে।
তাও আবার বেশিরভাগ জায়গায় ভাঙাচোরা, খানাখন্দে ভরা- যাকে অসহনীয় যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন সুমনা সুলতানা, যাকে পেশাগত কাজে নিয়মিত ঢাকা থেকে গাজীপুর যাতায়াত করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যাওয়া আসা মিলিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা লেগে যায়। এত ধুলা-বালি যে, শুধু গায়ের ড্রেস না, অনেক সমস্যা হয় যেমন শ্বাসকষ্ট। সামান্য বৃষ্টি হলেই মনে হয় নদী পার হচ্ছি। যানজটের যে অবস্থা হয় তা অবর্ণনীয়। অনেকেই বলা শুরু করছে যে, গাজীপুর চৌরাস্তা যাওয়া মানে জাহান্নামের চৌরাস্তায় যাওয়া একই কথা’।
এ প্রকল্পে জনভোগান্তি এতটাই চরমে উঠেছে যে, প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশ বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি লাইন নির্মাণ প্রকল্প থেকেই সরে এসেছে সরকার। অথচ মাত্র ২০ কিলোমিটার আলাদা বাস লাইন নির্মাণ করে ২০১৬ সালে ওই সড়কে বাস নামানোর কথা ছিল। সেটি ব্যর্থ হওয়ায় নতুন করে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২২ সালে।
প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, প্রকল্প নেয়ার আগে যে সমীক্ষা হয় তাতে সম্ভাব্য সব ঝুঁকির বিষয়গুলো থাকে এবং সেগুলো কিভাবে সামলানো হবে তারও উপায় দেয়া থাকে। আবার কাজ করার সময়েও কিছু সমস্যা তৈরি হয় যা ভোগান্তি বাড়ায়। তিনি বলেন, এমন কিছু কারণে তারা ভোগান্তি কমাতেই প্রকল্পে কিছু পরিবর্তনও এনেছেন তারা।
‘কাজ শুরুর আগে ট্রাফিক এক্সপার্ট আছে, তারা হিসেব করে পরিকল্পনা দেয় যে, এভাবে করলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। কিন্তু একটি বিষয় হলো এখানে রাস্তার অংশে বিকল্প রাস্তা নেই। ট্রাফিক চালু রেখেই কাজ করতে হচ্ছে। সেজন্য মাঝে মধ্যে পর্যাপ্ত লেন খোলা রাখতে পারি না। অল্প কিছু সময়ে হলেও দু’একটি লেন বন্ধ করে কাজ করতে হয়। মূল উদ্দেশ্য তো কাজ করা। ট্রাফিক চালু রাখতে গিয়ে প্রকল্পের কারণে কিছু সময় একটু অস্বাভাবিক যানজট হয়ে থাকে’।
বাংলাদেশে বাস্তবতা হলো প্রকল্প চলাকালে বিশেষ করে শহর এলাকায় সড়ক সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোতে এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিই দিনের পর দিন চলতে চলতে এখন স্বাভাবিক রূপ নিয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও ফ্লাইওভারসহ একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে এমন নাভিশ্বাস তৈরি হয়েছে নগরবাসীর মধ্যে। ‘রাস্তাঘাট দীর্ঘদিন পর্যন্ত ব্লক করে রাখা। যাওয়া আসায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। মানুষ ফুটপাতেও হাঁটতে পারছে না। দূষণ যেভাবে হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় গর্ত- কোন বিকল্প নেই। আপনাকে ওই পথ দিয়েই আসা যাওয়া করতে হবে। দেখা যাচ্ছে ৫/১০ মিনিটের রাস্তায় ঘণ্টা পর ঘণ্টা অর্থাৎ সময় চলে যাচ্ছে’, বলছিলেন সেখানকার একজন অধিবাসী। তবে তিনি তার নাম এ সংবাদে দিতে রাজী হননি।
আর এ দুঃসহ ভোগান্তির কারণে একদিকে যানজটের ভোগান্তি অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কর্মঘণ্টা, আবার পরিবেশ দূষণের শিকার হয়ে অসুস্থতাও বাড়ছে। কিন্তু বিদেশে এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় পরিস্থিতি কেমন হয় কিংবা সেখানকার অধিবাসীরা সেজন্য কী পরিস্থিতিতে পড়েন। এমন প্রশ্নের জবাবে গত এক যুগ ধরে লন্ডনে থাকা হুমায়রা নাজীবা নদী বলছেন, ‘এখানে সারাবছরই কোন না কোন রোড ওয়ার্কস চলে এবং তাদের বিকল্প ব্যবস্থাও থাকে। যখন একটা রোডে নির্মাণ কাজ চলে তখন অন্য রোডে বিকল্প ব্যবস্থা করে। আর মানুষও সেটা মেনে চলে। যে কারণে সমস্যার সম্মুখীন হই না বা বুঝি না যে রোডে কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক চলছে। হয়তো যে রোডে যাওয়া আসা করতাম সেটা ব্যবহার করছি না। আরেকটা রোড তারা বিকল্প দিলো সেটা দিয়েই চলাচল করছি’।
প্রকল্প পরিকল্পনার সময় দুর্ভোগের বিষয়টি ভাবনায় থাকে? কিন্তু বাংলাদেশে যখন প্রকল্পগুলো নেয়া হয় তখন পরিকল্পনা ও প্রকল্প ডিজাইনে এগুলো কতটা বিবেচনায় আসে বা যদি বিবেচনায় থাকেও তাহলে ভোগান্তি কমাতে এ ধরনের বিকল্প কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না কেন – এমন প্রশ্নের জবাবে নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্লানার্স ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলছেন যে, ভোগান্তি কমিয়ে কাজ করার সংস্কৃতিই বাংলাদেশে তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, ‘যে কোন প্রকল্পে অনেক ডিটেইলিং থাকে যখন টার্মস অ্যান্ড রেফারেন্স তৈরি করা হয়। সেখানে লেখা থাকে যে জনদুর্ভোগ কমাতে হবে, বিকল্প রাস্তা তৈরি করতে হবে। নির্মাণ সামগ্রী সুরক্ষিত রাখা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ঢেকে রাখতে হবে। বাংলাদেশে বায়ুদূষণ, ধুলিদূষণ, বৃষ্টির সময় কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হওয়া -এটা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে বিশাল একটা গাফিলতি আছে। এর সুযোগ নিয়ে ঠিকাদাররা বারবার উদাসীনতা দেখাচ্ছেন বলেই জনদুর্ভোগ সর্বোচ্চ’।
জনাব খান বলছেন, বড় যেসব প্রকল্প ভয়াবহ জনদুর্ভোগ তৈরি করেছে তাদের ক্ষেত্রে আইনের কোন প্রয়োগের নজিরও দেখা যায় না বলে সড়ক সংশ্লিষ্ট সব প্রকল্পেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
‘প্রকল্পের সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের দেখভাল করার সক্ষমতা হয় সর্বনিম্ন বা আগ্রহ কম। ফলে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সেই আগ্রহ নেই। আইনে জনদুর্ভোগের জন্য যাদের পেনাল্টি হওয়ার কথা সেটি না হওয়ার কারণেই পুনরাবৃত্তি হওয়ার ছবিটা আমরা দেখতে পাচ্ছি’।
অর্থাৎ প্রকল্প শুরুর আগে যে সমীক্ষা হয় সেখানে হয় নির্মাণকালীণ সম্ভাব্য দুর্ভোগের চিত্র তুলে এনে তার সমাধান নিশ্চিত করার উপায় থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে এসে তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করতে যেসব সরকারি সংস্থার কাজ করার কথা তাদেরও কোন তৎপরতা দেখা যায় না। ফলে প্রকল্প চলাকালে সড়কজুড়ে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার মূল্য দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। আবার কখনো এটি হয় দীর্ঘ সময়ের জন্য কারণ কোন প্রকল্পই সময়মত শেষ করার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে বিরল।
অর্থনীতিবিদ সায়মা হক বিদিশা বলছেন, প্রকল্প পরিকল্পনার সময় আর্থিক খরচের বাইরের বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয় কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে, সে কারণেই মানুষকে দুর্ভোগে পড়ে মূল্য দিতে হয় এবং তার কোন সমাধান পাওয়া যায় না।
‘মোটা দাগে একটা কষ্ট বেনিফিট এনালাইসিস সব বড় প্রকল্পে করা হয়। সে খরচের মধ্যে অনেক সময় আর্থিক খরচকে বড় করে দেখি। এর বাইরের খরচগুলো অনেক সময় সেগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিন্তাও করা হয় না। উন্নত দেশে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ঝুঁকির মতো বিষয়গুলো চুলচেরা হিসেব করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আর্থিক ক্ষতির বাইরের ক্ষতিগুলো হিসেবে থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানও থাকে না’।
সরকারের কোন বিকল্প নেই, বললেন মন্ত্রী : তবে বড় প্রকল্পে জনভোগান্তির বিষয়কে গুরুত্ব না দেয়া কিংবা এ বিষয়ে গাফিলতির অভিযোগকে আমলে নিতে রাজী নন বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলছেন, যে দুর্ভোগ হচ্ছে সেটি বাস্তব কারণেই এবং সে কারণে দ্রæততম সময়ে কাজ শেষ করা ছাড়া এ ক্ষেত্রে আর কোন বিকল্প নেই।
‘সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এ দুর্ভোগ বেশি হয়। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ কষ্ট বেড়ে যাবে, কিন্তু এর বিকল্প তো কিছু নেই। গবেষকরা চিন্তা করে কোন পথ যদি বলে সেটি দেখবো অবশ্যই। যত কম সময়ে পারা যাবে আমাদের দায়িত্ব তত কম সময়ে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। কোভিডের কারণে শ্রমিক, প্রকৌশলী ও বিদেশী কনসালটেন্টরা চলে গেছে। সবকিছু মিলে সময়টা বাড়িয়ে দিয়েছে। সময় বাড়া মানে কষ্ট ও দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়া। কিন্তু এ মুহ‚র্তে আমার হাতে আর কোন বিকল্প কিছু নেই’, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তবে বিআরটি, উত্তরা মতিঝিল মেট্রোরেল লাইন, বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শেষ হলেই যে চলমান জনভোগান্তি শেষ হয়ে যাবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই, কারণ এ ঢাকার বুক চিরেই ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করার কথা রয়েছে আরও অন্তত পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন। ঢাকাকে ঘিরে নির্মাণ হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ আরও কিছু প্রকল্প। আর এগুলো নির্মাণের সময় পরিস্থিতি কেমন দাঁড়ায় সেটিই হবে তখন দেখার বিষয়। সূত্র : বিবিসি বাংলা।