সাম্প্রদায়িক সম্পীতি ও আমার ভাবনা
কামরুল হাসান সোহাগঃ 
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বাক্ষর বহন করছে। ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে ভিন্নতা থাকলেও এ দেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সুদৃঢ় সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ।
আমার শৈশব কৈশোর ও যৌবনের একটা বড় অংশই কেটেছে অসাম্প্রদায়িকতার তীর্থস্থান খ্যাত কলসকাঠীতে। এখানে হিন্দু মুসলমানদের পার্থক্য কেবল ধর্মীয় অনুশাসন পালনে। আমাদের ঈদ শুরু হতো প্রতিবেশি নরসুন্দর এক কাকি (দিপকের মা) এর পিতলের আয়নায় নিজের মুখ দর্শনের মধ্যে দিয়ে।  ঈদের নামাজ শেষে দলবেঁধে সকল বন্ধুরা মিলে একে অপরের বাড়িতে যেতাম আমাদের গ্রুপের সাথে একটা বড় অংশই ছিলো সনাতন ধর্মালম্বী বন্ধুরা। একইভাবে দেশ সেরা জগৎধাত্রী পুজার উৎসবে আমরাও হিন্দু বন্ধুদের সাথে মিলে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করেছি। আমার খুব কাছের বন্ধুদের একটা বড় অংশই হিন্দু সম্প্রদায়ের (যুগল কুন্ডু শীল রিনা গাঙ্গুলি, অপু পাল, নরেশ বার সহ অনেকে)। যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই দেখেছি একদিকে মসজিদে মাগরিবের আজান হচ্ছে অন্যদিকে মন্দিরে পুজার ঘন্টা বাজছে। আমাদের সম্প্রদায়ের কেউ অসুস্থ হলে কিনবা মৃত্যু বরন করলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা সার্বক্ষনিক উপস্থিত থেকে আমাদের খোজ খবর নেন। তদ্রুপ আমরাও করে থাকি। আমরা একে অপরের বিয়ে সাদি সহ যেকোনো উৎসবে অংশ নেই।
আমার ধর্ম আমার কাছে সবসময়ই সর্বোত্তম, পবিত্র ও শান্তিময়। তার মানে এই নয় যে অন্য ধর্মগুলোকে হেয় করা, অপমান করা, ঘৃণা করার ধৃষ্টতা দেখাতে যাবো। এটা কখনোই উচিত না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সবাই আমার দেশে মিলে মিশেই থাকুক সে কামনাই করি।
সকলের মঙ্গলময় জীবন কামনা করছি।।
লেখকঃ সহ সম্পাদক- দৈনিক রাঙা প্রভাত
প্রধান পৃষ্ঠপোষক- সম্ভাবনার কলসকাঠী
Share.
Exit mobile version