বিশেষ প্রতিনিধি।। বুধবার পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে
পদ্মায় কাত হয়ে উল্টে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে পাটুরিয়া ঘাটে কাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। হামজা ফেরির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই শাহ আমানত ফেরি ডুবেছে। তবে ফেরিটির ভেতর পানি ঢুকে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোমধ্যে উদ্ধারকারীরা হামজা ফেরি থেকে ডুবে যাওয়া দুটি ট্রাক টেনে তুলেছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম। তিনি বলেন, ফেরিটির ভেতরে পানি ঢুকে এটির ওজন হাজার টনের বেশি দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু হামজার সক্ষমতা মাত্র ৬০ টন। হামজাকে দিয়ে কিভাবে ফেরিটিকে উদ্ধার করা যাবে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন।
বুধবার ২৭ অক্টোবর সকালের দুর্ঘটনার পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে যথারীতি ডাক পড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) হামজা ফেরির।
উদ্ধারকৃত ওই দুটি ট্রাক শাহ আমানত ফেরিতে ছিল। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ফেরি উল্টে ডুবে যাওয়া ট্রাকটি উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা টেনে তুলে আনার পর তা থেকে প্রয়োজনীয় মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন চালক ও হেলপার।
নৌ-দুর্ঘটনার পর ঘটনার শিকার জাহাজ উদ্ধারে বেশিরভাগ সময় দায়িত্ব পড়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ওপর। কিন্তু সংস্থাটির উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও হামজার ধারণক্ষমতা খুবই কম। এবারও দ্রুতই ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে হামজা।
ঘটনাস্থলে এসে বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম বলেন, দুর্ঘটনার পর পর আরিচা ঘাট থেকে উদ্ধারকারী হামজা ফেরিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। বিকাল চারটা পর্যন্ত হামজা দুটি ট্রাক টেনে তুলতে সক্ষম হয়। কিন্তু মূল সমস্যাটা হচ্ছে ফেরিটিকে উদ্ধার করা।
ডুবে থাকা ট্রাকগুলোকে শনাক্ত করা গেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ট্রাকগুলোতে দড়ি বাঁধার কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি ট্রাক টেনে তোলা হয়েছে হামজা ফেরির মাধ্যমে। উদ্ধার অভিযান শেষ হতে দেরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন নুরুল আলম।
তবে এখন পর্যন্ত হতাহত বা নিখোঁজের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল আলম। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ আছেন বলে জানা যায়নি। ফেরির ভেতরে থাকা যানবাহনগুলোতে তল্লাশি এখনও চলছে।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে বুধবার সকাল ৯টার কিছুক্ষণ পর পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় রো রো ফেরি শাহ আমানত। পদ্মা পার হয়ে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে পৌঁছানোর পরপরই সেটি কাত হয়ে নদীতে উল্টে যায়।
পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা বলেছেন ওই ফেরিতে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়াও একাধিক মোটর সাইকেল ও প্রাইভেট কার ছিল। ঘাটে ভেড়ার পর কয়েকটি গাড়ি নামতে পারলেও বাকিগুলো ফেরির সঙ্গেই ডুবে যায়। পরে কয়েকটি ট্রাক ও ভ্যানকে নদীতে ভাসতে দেখা গেছে।
ফেরির লোকজন ও ট্রাকচালকদের মতে, ফেরিতে ১৭টি ট্রাক, একটি কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল। শুধু তিনটি ট্রাক নামতে পেরেছে।