রাঙা প্রভাত প্রতিনিধি।।
শনিবার হঠাৎ লঞ্চ বন্ধের ঘোষণায় সদরঘাটের, মানুষের চরমদশা।
বরিশাল-ঢাকাসহ সারাদেশে যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল সংস্থা (লঞ্চ মালিক সমিতি)। জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতের যাত্রী ভাড়া পুননির্ধারণ না করায় লোকসানের আশঙ্কায় এমন সিদ্ধান্ত নেয় লঞ্চ মালিক সমিতি।
শনিবার ৬ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে যাত্রবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকেলে বাংলাদেশ নৌযান চলাচল যাত্রীপরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেন, শুক্রবার দুপুরে মালিক সমিতির এক জরুরি সভায় লঞ্চ মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর দাবি করেন। তখন ওই সভা থেকে ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলি। দুপুর ১২টার মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছিলেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান। কিন্ত তিনি কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় মালিকরা লোকসান দিয়ে লঞ্চ চলাচল অব্যাহত রাখতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় অর্ধশত রুটে বন্ধ যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল। দক্ষিণাঞ্চল থেকেও শনিবার কোনো লঞ্চ রাজধানীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। শুক্রবার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের রাজধানীমুখী মানুষ এদিকে শেষ ভরসা পাচ্ছিলেন। কিন্তু এবার লঞ্চও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজধানী ও আশপাশের জেলার যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
নৌযান চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন নেভিগেশনের মালিক বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ২০১৩ সালের পর একাধিকবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও লঞ্চ ভাড়া সমম্বয় করা হয়নি। চলমান প্রেক্ষাপটে আমরা চাই শতভাগ ভাড়া বৃদ্ধি করা হোক। করোনাকালে আমরা চরম আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। লোকসান দিয়ে আর লঞ্চ চালানো সম্ভব নয়।
বরিশাল-ঢাকা নৌপথের কীর্তণখোলা-১০ লঞ্চের সহকারী ব্যবস্থাপক রিয়াজুল করীম বেলাল বলেন, মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার আমাদের লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। অগ্রিম বুকিং নেওয়া কেবিন যাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ছবি: ভোরের কাগজ।
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক যাত্রী বৃহস্পতিবার বরিশালে এসেছিলেন পারিবারিক প্রয়োজনে। শনিবার লঞ্চে তার বুকিং ছিল। কিন্ত লঞ্চ বন্ধ হওয়ায় তিনি সড়কপথে ভাঙ্গা হয়ে ঢাকা যাচ্ছেন মোটরসাইকেলে করে। এভাবেই দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে রাজধানীমুখী হচ্ছেন বা অনেকে আটকে আছেন।