*দখল করে ভবন নির্মাণ
*শিক্ষক পরিবার অবরুদ্ধ
বরিশাল অফিস :- জেলার উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের প্রবাহমান সন্ধ্যা নদীর আংশিক ও নদীপাড়ের সরকারী খাস জমি রাতের আধাঁরে দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় এক ভূমিদস্যু ও তার সহযোগীরা। এতে বাঁধা প্রদান করায় এক শিক্ষক পরিবারকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দক্ষিণ হারতা পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অনাথ বন্ধু হালদার অভিযোগ করে বলেন, হারতা মৌজায় ১৫৩৩/১৫৩৫ নং দাগের মধ্যে ২.৫ শতক জমি তিনি দলিলমূলে ক্রয় করে দীর্ঘদিন থেকে বসতঘর উত্তোলণ করে বসবাস করে আসছেন। তার বসত ঘরের পাশে সরকারী খাস জমির পর সন্ধ্যা নদীর অবস্থান। তিনি আরও জানান, গত কয়েক মাস পূর্বে রাতের আধাঁরে সন্ধ্যা নদীর আংশিকসহ সরকারী খাস জমি দখল করে বালু ভরাট করেন চিহ্নিত ভ‚মিদস্যু দক্ষিণ হারতা গ্রামের মৃত মনোহর সরকারের ছেলে সুভাষ চন্দ্র সরকার।
অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অনাথ বন্ধু হালদার আরও বলেন, গত কয়েকদিন থেকে ভ‚মিদস্যুদের দখল করা সরকারী জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এসময় নদী ও সরকারী খাস জমি দখলের প্রতিবাদ করায় প্রভাবশালীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভ‚মিদস্যুরা সরকারী জমি দখলের পর আমাকে বসতভিটে থেকে উৎখাত করার জন্য সরকারী জমিতে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে আমার (অনাথ বন্ধু) ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। উপায়ন্তর না পেয়ে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ওই জমিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ১৪৪/৪৫ ধারা জারি করিয়েছি। এতে ভ‚মিদস্যুরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে (অনাথ বন্ধু) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
দক্ষিণ হারতা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, সুভাষ নদীর যে স্থানটি দখল করে বালু ভরাটের পর পাকা স্থাপনা নির্মান করছে, পূর্বে ওই স্থানটি দিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা নদীর পানিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতো। সুভাষের দখলের কারণে বর্তমানে বাজারের ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভ‚মিদস্যু সুভাষ চন্দ্র সরকার এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। তারা (ব্যবসায়ী) সুভাষের হাত থেকে সরকারী খাস জমি ও সন্ধ্যা নদী দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত সুভাষ চন্দ্র সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারী খাস জমি আমি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়েছি। নদী দখলের ব্যাপারে তিনি বলেন, হয়তো কিছু অংশ নদীর মধ্যে পরেছে। তবে সরকারী খাস জমি কার কাছ থেকে এবং কিভাবে ক্রয় করা হয়েছে, তিনি (সুভাষ) তার কোন সদূত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নদী কিংবা সরকারী খাস জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মানের বিষয়টি আমার জানা নেই। খুবশীঘ্রই সরেজমিনে কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে দখল মুক্তসহ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।