বিশেষ প্রতিনিধি।। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গতকাল শনিবার রাতে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং কাছাকাছি দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো শক্তিশালী হয়ে আজ রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’তে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
জানা গেছে, নিম্নচাপটির গতিমুখ এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে। এটি বারবার দিক বদলাচ্ছে। গত তিন দিনে তিন বার দিক বদলেছে। আর দিক পরিবর্তন না করে এভাবে অগ্রসর হলে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর তা ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ‘আমরা এটি নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছি। আগামী ১০ থেকে ১২ মের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানবে এটা নিশ্চিত। গভীর নিম্নচাপ হয়ে এটি আজ (রবিবার) ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এর গতিপথের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ধারণ করা হচ্ছে, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূল দিয়ে যেতে পারে। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে। আমরা সমুদ্রবন্দরগুলোকে প্রাথমিক সতর্ক বার্তা দিয়ে দিয়েছি।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সানাউল হক মন্ডল বলেন, ‘নিম্নচাপের গতিপথ আপাতত উত্তর-পশ্চিম দিকে আছে। গতিপথ যে কোনো সময় যে কোনো দিকে মোড় নিতে পারে।’ ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (মৌসুম ভবন) জানিয়েছে, নিম্নচাপটি আজ রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আগামী ১০ মে ভারতের উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমূল হক বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
আগামী তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া অফিস আরো জানিয়েছে, এই মে মাসে আসানি ছাড়াও আরো একটি ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা রয়েছে। আশঙ্কা রয়েছে একজোড়া ঘূর্ণিঝড়ের। এপস উইন্ডির চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আসানি আঘাত হানতে পারে ১১ মে এবং পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়টি আসতে পারে ১৬ মে। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরোলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ভারত মহাসাগরের পশ্চিমী বাতাসের প্রবাহ এতটাই জোরদার যে দুই গোলার্ধে একই সঙ্গে দুই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।