রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় নিহত ১০ জনের মধ্যে সাত জন এবং হাসপাতালে ভর্তি আহত ১৯ জনের পরিচয় মিলেছে। স্বজনরা এসে তাদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা জানিয়েছেন, চালক ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বাস চালানোয় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন—ঝালকাঠি জলা সদরের নেয়ড়ী এলাকার মনির হোসেন হাওলাদারের ছেলে আরাফাত হোসেন হাওলাদার (৯), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর ভেচকি এলাকার কুদ্দুস আকনের ছেলে নজরুল ইসলাম আকন (৩৫), রাকিব আকনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২০), বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরবাদ এলাকার মোবারক আলী বেপারীর ছেলে হালিম মিয়া (৩১), ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার সুতারকান্দা এলাকার মৃত আওলাদ আলীর ছেলে সেন্টু মোল্লা (৫০), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি গ্রামের মৃত আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে রমজান হাওলাদার (৩৮) এবং বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মুন্ডুপাশা গ্রামের মনোরঞ্জন শীলের ছেলে মাধব শীল (৪৫)।
আহতরা হলেন—মুন্ডপাশা গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন শীলের ছেলে মাধব শীল ও তার ছেলে অনিক, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার তোয়া মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া, বরিশাল সদর উপজেলার কবির আহমদের ছেলে লিটন, বানারীপাড়া উপজেলার মাদারকাঠী গ্রামের নিবারন চন্দ্রের ছেলে বিমল, ঝালকাঠি সদরের দাড়কানা এলাকার আঁখি, ঝালকাঠির শাহ আলমের মেয়ে লতা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী গ্রামের ফোরকানের মেয়ে ফরিদা, একই গ্রামের তৈয়বুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন, ভান্ডারিয়া উপজেলার রাজপাশা গ্রামের শাহজাহানের ছেলে আনিস, নেছারাবাদ উপজেলার গৌবিন্দপুরের আইউব আলীর ছেলে সেলিম, একই গ্রামের সুখরঞ্জনের ছেলে কালু, কাউখালী উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে হাসান, বরিশাল সদরের দুলালের ছেলে মিলন, মনিরের মেয়ে মরিয়ম, উজিরপুরের মুন্ডপাশা গ্রামের দারিকানার ছেলে দিনেশ, শিকারপুর এলাকার জলিল মৃধা ও ঢাকার হাজারীবাগের আব্দুস সত্তারের ছেলে রুহুল আমিন।
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চার তলায় চিকিৎসাধীন সেলিম ও কালু জানান, তারা বাসের পেছনের দিকে বসেছিলেন। বাসটি যখন গাছে ধাক্কা দেয় তখন যাত্রীরা ঘুমিয়ে ছিলেন। গাছে ধাক্কা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব যাত্রী কমবেশি আহত হন।
তারা দাবি করেন, ভোরের দিকে বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ওই বাসে আরও পাঁচ যাত্রীর ওঠার কথা ছিল। কিন্তু বাসটি ছেড়ে দেওয়ায় তারা পরের গাড়িতে ওঠেন। এতে বেঁচে যান তারা।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুর রহমান খান। অন্য সদস্যরা হলেন—বিআরটিএর উপ-পরিচালক ও উজিরপুর থানার ওসি। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’
বরিশালের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম আখতারুজ্জামান জানান, বাসের চালককে আটকে চেষ্টা চলছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আহতদেরসুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, রবিবার (২৯ মে) ভোর ৫টায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের উজিরপুর উপজেলার শানুয়ার এলাকায় গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় ১০ যাত্রী নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।