রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। সৌদি আরবে থাকতেন আবু সাইদ সেন্টু ও হৃদয় বানু। সেখানে থাকাকালীন পরিচয় হয় তাদের। সেই সূত্র ধরেই প্রবাসেই বিয়ে করেন সেন্টু ও হৃদয় বানু। বিয়ের কিছু দিন পর তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তারা টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা ধোপাপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু হৃদয় বানুকে ঠিকমতো ভরণপোষণ দিতেন না সেন্টু। ঠিকমতো বাড়িতেও থাকতেন না তিনি। এ নিয়ে ক্ষোভ আর অভিমানে স্বামীকে হত্যা করেন হৃদয় বানু।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১২ এর সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জনান।
এর আগে সোমবার (১ আগস্ট) রাতে সেন্টু হত্যা মামলার আসামি হৃদয় বানুকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। নিহত সেন্টু টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তারটিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলী খানের ছেলে। গ্রেফতারকৃত হৃদয় বানু হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
র্যাব-১২ এর সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, দুই বছর আগে সেন্টু তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে হৃদয় বানুকে বিয়ে করেন। বিয়ের সাত মাস পর হৃদয় বানু দেশে ফিরে গাজীপুরের টঙ্গীতে সেন্টুর বড় ভাই খোরশেদের ভাড়া বাসায় ওঠেন। এক মাস পর সেন্টু দেশে চলে আসেন। টঙ্গীতেই হৃদয় বানু কন্যা সন্তান জন্ম দেন। গত দুই মাস আগে তারা টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা ধোপাপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানে ১০-১২ দিন পর পর সেন্টু যেতেন। কখনও এক দিন আবার মাঝে মধ্যে ২-৩ ঘণ্টা থেকে চলে যেতেন। হৃদয় বানুর ভরণপোষণও ঠিকমতো দিতেন না সেন্টু। এমনকি যোগাযোগও করতে চাইতেন না তিনি। এতে হৃদয় বানুর স্বামীর প্রতি রাগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, গত ২৭ জুলাই রাত ৯টার দিকে সেন্টু হৃদয় বানুর বাসায় গিয়ে বিদেশ যাওয়ার বিমানের টিকিটের কথা বলে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। রাতেই হৃদয় বানু তার বাবার বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা সেন্টুকে দেন। টাকা পেয়ে সেন্টু বাড়ি চলে যেতে চাইলে তাকে বাঁধা দেন হৃদয় বানু। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে সেন্টু হৃদয় বানুর কাছে থেকে যান। রাত ২টার দিকে সেন্টু ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় হৃদয় বানু সেন্টুর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। এরপর শ্বাসরোধ করে সেন্টুকে হত্যা করে পালিয়ে যান। সকালে শিশু মেয়ের কান্নার শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন ঘরের ভেতর সেন্টুর লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ২৯ জুলাই সেন্টুর প্রথম স্ত্রী নাহিদা খানম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।
মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, হবিগঞ্জের বাপের বাড়ি থেকে সোমবার (১ আগস্ট) রাতে হৃদয় বানুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।