রাঙা প্রভাত ডেস্ক।।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর সম্প্রতি জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের দেওয়া এক ভিডিও বক্তব্যকে ঘিরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বলে রাজনীতির অঙ্গনে বেশ গুঞ্জন রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বিএনপি কিংবা জামায়াতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির অভ্যন্তরে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার দাবি উঠছিল। বছরখানেক আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্য জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার বিষয়ে মতামত দিয়েছিলেন। নানা কারণে এর বাস্তবায়ন হয়নি। তবে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
জামায়াত কি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ত্যাগ করেছে? জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “তারা (জামায়াত) তো বলেছে— ‘আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে এবং ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না।’ এখানে আর বলার কী আছে।”
জামায়াত জোট ছাড়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিকে জানিয়েছে কি না— জানতে চাইলে টুকু বলেন, ‘এখানে আর আনুষ্ঠানিকতার কী আছে। তাদের (জামায়াত) যা বলার তো বলে দিয়েছে।’
২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি জামায়াতের আমিরের বক্তব্য শুনিনি। জামায়াতের জোট ছাড়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কেও আমি কিছু জানি না। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
সম্প্রতি এক ভিডিও বক্তব্যে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এতদিন একটা জোটের সঙ্গে ছিলাম। আপনারা ছিলাম শুনে হয়ত ভাবছেন কিছু হয়ে গেছে নাকি? হ্যাঁ হয়ে গেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ জোট দেশের জন্য…. ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এই জোট তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে। তারপর সেটা আর ফিরে আসেনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা বহু চিন্তা করেছি, বাংলাদেশের জন্য এই জোটে আর উপকারি কিছু নেই। এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছে, বিশেষ করে প্রধান দল, তাদের এই জোটকে কার্যকর করার কোনো চিন্তা নেই। বিষয়টা আমাদের কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শফিকুর রহমান বলেন, এরকম একটা জোটের সঙ্গে যদি কেয়ামত পর্যন্ত থাকি, যদি কর্মসূচির…, জোটের প্রধান দলের একজন নেতা তো বলেই ফেলেছেন— আমরা শরিকে নেই, সমর্থন করি না। তাদের সঙ্গে…। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর ওপর ভর করে পথ চলা। তবে হ্যাঁ জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব। এটা আমরা তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি, এর সঙ্গে তারা একমত পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না। তার বাস্তবতাও নেই।
তিনি আরও বলেন, এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। যদি আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করেন তাহলে আমাদের আগামী দিনগুলোতে কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে। অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। দোয়া করেন, এসব ত্যাগ যেন আল্লাহর দরবারে মঙ্গলজনক হয়। এ ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ পাক যেন আমাদের পবিত্র একটি দেশ দান করে। যে দেশটা কোরআনের আইনে পরিচালিত হবে।