ইব্রাহীম রুবেল।।
হাজারো নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ছাড়াই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ। নান্নু, সুমন এবং রাজ্জাক নির্বাচক প্যানেল অবশেষে শ্রীরামে চেপে এযাত্রায় তরী তীরে ভিড়াতে সক্ষম হয়েছে। বোর্ড সভাপতি যেখানে দলের টসের বিষয়টি পর্যন্ত খবরাখবর রাখেন বা রাখতে চান তিনিও কিনা শ্রীরামেই মজেছেন। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগের দিন জানালেন আমরা পরের বিশ্বকাপ নিয়ে চিন্তা করে পাইপলাইন সাজাচ্ছি। নির্বাচকগণ দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে জানালেন শ্রীরামের একবছরের প্লানের বাস্তবায়নে তারা সবাই একমত হয়ে এই দল ঘোষণা করেছেন। ওদিকে দলে কোচের ছড়াছড়ি। দেখা যাক শেষ অবধি তরুণগণ দেশের ক্রিকেটের জন্য কি ভেল্কি দেখাতে পারে। কিছুদিন আগে দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খ্যাত সুজন ভাই বললেন উইকেট ফ্যাক্ত নয় মারতে হবে ছয় চার। এইদিকে নতুন পরামর্শক বললেন ভিন্ন কথা। পারফর্মেন্স নয় তিনি চান ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়। এখন কোটি রহস্যের প্রশ্ন হোল ইমপ্যাক্ট টা আসলে কি? এর কি উত্তর আছে বোর্ড সংশ্লিষ্টদের নিকট। যাইহোক দেখে আসি ১৫ সদস্যের এই খেলোয়াড়দের আমলনামা।
সাকিব আল হাসান, অধিনায়ক বাংলাদেশ টি ২০ দল। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের আমলনামা ঘাটতে যাওয়াটা শুধু সময় অপচয়ের নামান্তর। আফিফ, মোসাদ্দেক, মেহেদি মিরাজ, তাসকিন, লিটন এবং মুস্তাফিজ পরীক্ষিত সৈনিক। শেষ কিছুম্যাচে মুস্তাফিজকে যথাযথ না মনে হলেও অভিজ্ঞতা, ভেরিয়েশন এবং ডেথ ওভারে অধিনায়কের প্রধান হাতিয়ার তিনিই বটে। অস্ট্রেলিয়া কন্ডিশন বিবেচনায় এবাদত ও হাসান মাহমুদ খারাপ নয় তবে শরিফুল কে আমি একধাপ এগিয়ে রাখবো।
এবার আসি সাব্বির প্রসঙ্গে। তিনি এশিয়া কাপের একটি ম্যাচ ব্যতীত সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ আফাগানিস্থানের বিপক্ষে ১রান করেছেন চট্টগ্রামে।
সোহান বাংলাদেশ টি২০ দলের সহঅধিনায়ক তার ব্যাটিং পরিসংখ্যান ১৩,৮,৪,২,৩,০,১৬,২৮,১১,৪,২৫,৭,২৪ এবং সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের সাথে ৪২। জিম্বাবুয়ে কে তো ছোট করে দেখার জো নেই।
নাজমুল শান্ত তিনি স্বভাবেও যেন ধীর স্থির অথচ খেলে ফেলেছেন ৯ টি টি২০ ম্যাচ। ১০৪.২২ স্ট্রাইক রেটে ১৮.৫০ গড়ে মোট সংগ্রহ করেছেন ১৪৮ রান তার মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই তুলেছেন ৮৩ রান।
এত সব দরকষাকষি আর হিসাব নিকাশের আসল রহস্য মুদ্রার অপর পাতায়। রিয়াদ, সৌম্য এবং দলের সব থেকে কৃপণ অলরাউন্ডার বোলার মাহিদি হাসান থাকতে পারতেন। নাসুম আহমেদ, শান্ত এবং সোহান পরিবর্তে উপরোক্ত তিন জন যথেষ্ট যোগ্য এবং অভিজ্ঞ ও বটে।সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ইনজুরিতে থাকা সাইফুদ্দিন এর পরিবর্তে সৌম্য সরকার অবশ্যই যথেষ্ট যোগ্য হিসেবেই বিশ্বকাপ দলে থাকার দাবি রাখেন। ব্যকআপ ওপেনার হিসেবে অবশ্যই পারভেজ হাসান ইমন দলে থাকতে পারতেন। তাকে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে রেখেও না খেলিয়েই দেশে আনা হল এইবার তাকে চুরান্ত ভাবে বাদ দেয়া হল। জিম্বাবুয়ের সাথে একটা ম্যাচ খেলিয়েই কি হিসেব মিলিয়ে নিলেন স্বয়ং নির্বাচক আর বোর্ড ভাল জানেন।
আমার মতে সাকিব, মিরাজ, ইমন, লিটন, মাহমুদুল্লাহ, সৌম্য, মোস্তাফিজ, তাসকিন, শরিফুল, হাসান মাহমুদ, আফিফ, মোসাদ্দেক, রাব্বী, সাইফুদ্দিন এবং সাব্বির।
তারপরও দেশের জন্য শুভকামনা রইলো।