বিশেষ প্রতিনিধি।। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে চিকিৎসার নামে তিন দিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে কিশোরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক কবিরাজের বিরুদ্ধে। উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের সরঞ্জাবাড়ি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।

নিহত কিশোর সোহেল রানা (১৫) সরঞ্জাবাড়ি গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে। এ ঘটনায় কবিরাজ মোকাব্বর হোসেনসহ (৫৫) তাঁর সহযোগী আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও শফিকুল ইসলামকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বাড়ি একই উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের শাহপাড়া গ্রামে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা জানায়, সোহেল রানা দুই বছর আগে পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হয়। হাসপাতালে চিকিৎসার পর সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলেও একটি পা বাঁকা থেকে যায়। এ অবস্থায় সোহেল রানার মা খালেদা বেগম (৪৫) জানতে পারেন একই উপজেলার মাগুড়া সাহপাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মোকাব্বর হোসেন কবিরাজি চিকিৎসায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত অনেক রোগীকে সুস্থ করে তুলেছেন। এ কথা শুনে খালেদা বেগম তাঁর ছেলের পা ভালো করতে কবিরাজ মোকাব্বর হোসেনকে বাড়িতে ডেকে পাঠান। গত মঙ্গলবার সকালে মোকাব্বর হোসেন তাঁর দুই সহযোগী আনোয়ার হোসেন ও শফিকুল ইসলামকে নিয়ে সোহেল রানাদের বাড়িতে আসেন। এরপর শুরু করেন চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা।

সোহেল রানার মা খালেদা বেগম বলেন, কবিরাজ মোকাব্বর হোসেন প্রথমে বিভিন্ন গাছের লতাপাতা গুঁড়া করে গরম পানিতে সিদ্ধ করেন। সেই পাতার রস গরম তেলে মিশিয়ে আমার ছেলের শরীরে মালিশ করতে থাকেন। তেল মালিশ শেষে ছেলের দুই পায়ে ইট বেঁধে তার ওপর পা দিয়ে চাপ দেয়। এতে আমার ছেলের পা ভেঙে যায়। পরে সেই ভাঙা পায়ে গরম বালুর সেঁক দেওয়া শুরু করেন। এভাবে তিন দিন ধরে আমার ছেলের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করেন। আমার ছেলে পানি খেতে চাইলেও তাঁরা দেয়নি। শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসায় বাধা দিলেও আমাদের নানা ভয়ভীতি দেখান তাঁরা।

কিশোরগঞ্জ থানার ওসি রাজীব কুমার রায় বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের নীলফামারী আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Share.
Exit mobile version