বিশেষ প্রতিনিধি।। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে গতকাল শুক্রবার দুটি লাইটার জাহাজের (ছোট জাহাজ) সংঘর্ষে চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুই নাবিক নিখোঁজ রয়েছেন। বাকি তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বন্দর সূত্র জানায়, সুলতান সানজার জাহাজ গত বুধবার বিকেল ৩টায় বহির্নোঙরে বড় একটি জাহাজ থেকে পাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার সাগরে পৌঁছে।
আকিজ গ্রুপের আকিজ লজিস্টিকস-২৩ জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে সুলতান সানজার জাহাজটি ডুবে যায়। ডুবতে যেতে দেখে লাইটার জাহাজের তিন নাবিক অন্য নাবিকদের বাঁচাতে সাগরে ঝাঁপ দেন; কিন্তু তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। তিন নাবিক এ সময়
সাগরে সাঁতার কাটছিলেন। এ সময় কোস্ট গার্ডের একটি টহল জাহাজ এগিয়ে এসে তিন নাবিককে জীবিত উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে আকিজ গ্রুপের শিপিং সেক্টরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথমে ফোন ধরে প্রতিবেদকের প্রশ্ন শুনে কথা শোনা যাচ্ছে না বলে ফোন রেখে দেন। পরে তিনি আর ফোন ধরেননি।

সুলতান সানজার জাহাজের মালিক হচ্ছেন ঢাকা দোহারের মোহাম্মদ শাহ আলম। আর পণ্যের এজেন্ট হচ্ছে গ্রিন এন্টারপ্রাইজের মালিক এ কে এম সামশুজ্জামান রাসেল, যিনি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট। জাহাজটিতে ৮৫০ টন পাথর বোঝাই করে পাবনার নগরবাড়ীতে নেওয়া হতো। অভিযোগ উঠেছে, বেশি পাথর বোঝাইয়ের কারণে জাহাজটি ডুবে গেছে। এ বিষয়ে শিপিং এজেন্টের কর্মকর্তা মুন্না দে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই জাহাজে আমরা ৯০০ টনও পাথর নিই। মূলত জাহাজটি নোঙর করার সময়ই অতর্কিতে আকিজের জাহাজটি আচমকা ধাক্কা দেওয়ায় মুহূর্তেই জাহাজটি ডুবে যায়। ’
কোস্ট গার্ড ও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কর্মকর্তারা বলছেন, অতিরিক্ত পাথরবোঝাই এবং বেপরোয়া গতির কারণে জাহাজটি ডুবে গেছে।

কর্ণফুলীতেও ট্রলারডুবিতে এখনো দুজন নিখোঁজ : গত ১১ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকার সি রিসোর্সেস ঘাটসংলগ্ন বয়া এলাকায় র্যাংকন কম্পানির মালিকানাধীন এমবি মাগফেরাত নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার নদীতে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারটি মেরামতের জন্য ড্রাইডকে তোলার সময় প্রপেলার (পাখা) খুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশে থাকা বয়া এবং আরো কয়েকটি ফিশিং ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল।

জাহাজটিতে মোট ১৬ জন নাবিক ছিলেন। এর মধ্যে ৯ জন তীরে উঠতে সক্ষম হন। নিখোঁজ ছিলেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের লাশ গত বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়। তাঁরা হলেন ট্রলারের ক্যাপ্টেন ফারুক বিন আবদুল্লাহ, সেকেন্ড অফিসার জহিরুল ইসলাম, চিফ অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, ফিশ মাস্টার জহির উদ্দিন এবং ডক সদস্য রহমত। ওই ট্রলারের গ্রিজার প্রদীপ চৌধুরী এবং রাকিব নামের এক নাবিকের বাবা খোরশেদ আলম এখনো নিখোঁজ।

Share.
Exit mobile version