এলিসন সুঙ, মৌলভীবাজার।। ঘৃণা ও মৃত্যু যে মুহূর্তে বিজয় লাভ করে, সে মুহূর্তেই যীশুখ্রিষ্ট আসেন তার রাজ্যের অধিকার গ্রহণ করতে।ক্রুশের মধ্যদিয়ে যীশুখ্রিষ্টের মৃত্যু সুস্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, তার রাজ্য এজগতের নয়।মানবপ্রেমের মধ্যদিয়ে পাপ থেকে মানুষকে উদ্বার করার জন্য যে মুহূর্তে যীশুখ্রিষ্ট তার জীবন বিসর্জন দিলেন সেই মুহূর্তে থেকেই যীশু খ্রিষ্টের রাজত্ব শুরু হয়।
সেই বিশ্বাস নিয়ে খাসি খ্রিষ্টান ক্যাথলিক ধর্মাম্বলী ভাই-বোনরা রাজাধিরাজ যীশু খ্রিষ্টকে রাজা হিসাবে মেনে শ্রদ্ধা ও ভক্তিভরা মন নিয়ে উৎযাপন করছে খ্রিষ্ট রাজা পর্ব জিংয়াসেং।
আলিয়াছড়া পুঞ্জি ক্যাথলিক সমাজ আয়োজনে ও বাংলাদেশ খাসি ক্যাথলিক রাংবাবালাং এসোসিয়েশনের সহযোগীতায় হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা অধীনে আলিয়াছড়া খাসি পুঞ্জিতে দু’দিন ব্যাপি পালন করা হয় এই ধর্মীয় উৎসবটি।
প্রথম দিন শনিবার বিকেল দিকে খ্রিষ্ট রাজা জিংয়াসেংকে কেন্দ্র করে দলগত ভাবে খ্রিষ্টভক্তরা সমবেত হয় প্রার্থনা করতে, ব্যক্তিগত মানত, উদ্দেশ্য প্রার্থনা, অনুতাপ প্রার্থনা(পাপস্বীকার),আরাধনা সংস্কারসহ মানব কল্যানে প্রার্থনা করা হয় এই জিংয়াসেং ধর্মীয় উৎসবে।
রবিবার (২০ নভেম্বর ) সকাল ১১টা দিকে
একঝাক খাসি তরুণীরা ঐতিহ্যগত পোশাক পরিধান করে সাজ সাজ রবে পরিবেশন করেন নাচে গানে তালে তাল মিলিয়ে করা হয় শোভাযাত্রা। তারই মধ্যদিয়ে আরম্ভ হলো পর্বের মূল ধর্মীয় খ্রিষ্টযাগ।এই মহা খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত মধ্যদিয়ে শুরু হয় মূলপর্ব।
এই জিংয়াসেং উপস্থিত থেকে খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন সিলেট খ্রিষ্টান ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, খ্রিষ্টযাগে উপস্থিত থেকে সহযোগীতা করেন
শ্রীমঙ্গল ক্যাথলিক মিশনের পাল-পুরোহিত ফাদার নিকোলাস বাড়ৈ সিএসসি, সহকারী যাজক ফাদার কেবিন কুবি,ফাদার ভেলেন্টাই তালাং, সিলেট খাদিমনগর মিশনের ফাদার যোসেফ গমেজ ওএমআই ,বড়লেখা ডিমাই মিশনের ফাদার রবি ওএমআই, ঢাকা থকে ফাদার সুব্রত বনিফাস টলেন্টুনিও, ফাদার পিয়ুষ পডুয়েং ওএমআই, মেঘালয় থেকে ফাদার মাইকেল,অবলেট ফাদার সুপিরিয়র ফাদার অজিত কস্তা ওএমআইসহ আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিশনের ফাদার, ব্রাদার,সিস্টারসহ তিন হাজার বেশী ধর্মীয় বিশ্বাসী খ্রিস্টভক্তরা।
বাংলাদেশ রাংবাবালাং এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মি:আন্তনী লামিন বলেন এই বছর আমরা ৬১তম এই ধর্মীয় উৎসব পালন করছি।প্রত্যেক বছর আমরা পালাক্রমে বিভিন্ন খাসি পুঞ্জি(পল্লী)তে মহাসমারোহে পালন করে থাকি, মাঝখানে দু’টি বছর কোভিড-১৯ কারণে এধর্মীয় উৎসব টি পালন করতে পারিনি। তাই গতবছর থেকে পুনরায় ভাবে আবার এই উৎসব পালন করছি, এখানে সিলেট বিভাগে সকল জেলা-উপজেলায় বসবাসরত ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাম্বলী ও দেশের বিভিন্ন বিভাগের খ্রিস্ট বিশ্বাসীরা অংশগ্রহণ করেন।
অবশেষে বিভিন্ন অঞ্চল ভিক্তিক দলগত ভাবে খ্রিষ্ট রাজ যীশুর প্রতিক নিয়ে
বিকেল ৩টায় ভাবগাম্ভীর্য সাথে প্রার্থনা ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেন অংশগ্রহণকারীরা।