অনলাইন ডেস্ক।। চার্জ দিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে বিশ্বকাপের ফুটবল
বর্তমান আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। বিজ্ঞানের কতশত প্রযুক্তি নানাভাবে মানুষকে বিস্মিত করে চলেছে। কাতার বিশ্বকাপেও রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া। এমনকি যে বল দিয়ে বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে সেই আল রেহলাতেও ব্যবহার করা হয়েছে প্রযুক্তি। খেলার আগে বলগুলো চার্জ দিতে হয়।
অবাক হচ্ছেন? মোবাইল, ল্যাপটপ, ঘড়ি, ক্যামেরা যেভাবে চার্জ দিয়ে ব্যবহার করতে হয় তেমনি কাতার বিশ্বকাপে বলেও চার্জ দিতে হয়।
এবার বিশ্বকাপের বল প্রস্তুত করেছে ফিফার অন্যতম বল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এডিডাস। ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বকাপের জন্য বল তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার বলটির নাম রাখা হয়েছে ‘আল রেহলা’। অর্থ ভ্রমণ। মরুর দেশ কাতারের পতাকা, ঐতিহ্যবাহী নৌকা, স্থাপত্য ও সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তৈরি করা হয়েছে এই বল। বলে ২০টি প্যানেলের ডিজাইন ব্যবহার করেছে অ্যাডিডাস। প্যানেলগুলো ত্রিভুজাকৃতির। যা মনে করিয়ে দেয় মধ্যপ্রাচ্যের ‘ধো’ নৌকার কথা। প্যানেলের দুই দিক রঙে আবৃত, যা কাতারের পতাকা ও আরবের ঐতিহ্যবাহী সাদা পোশাককে ফুটিয়ে তুলেছে।
আল রেহলায় চার্জ দেয়ার কারণ হচ্ছে প্রতিটি বলের মাঝখানে রয়েছে একটি সেন্সর। সেন্সরগুলো ব্যবহার করা হয়েছে অফসাইড সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য। শুধু তাই নয়, সেন্সরের মাধ্যমে স্পর্শ এবং বলের অবস্থানও নির্ণয় করা যাবে। এখানে যে সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) মাধ্যমে সেটি সেমি অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজি।
আল রিহলা একবার চার্জে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। যে কোনো ম্যাচের আগে এ কারণে বলগুলো পুরোপুরি চার্জ দেওয়া হয়। এই সেন্সর থেকে পাঠানো সংকেত মাঠের চারপাশে অবস্থানরত এন্টেনার সাহায্যে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির মাধ্যমে প্রোডাকশন কন্ট্রোল রুমে জানিয়ে দেওয়া হয়। এতে বলের অবস্থান ঠিক কোথায় সহজে জানা যায়।
ফিফা বলছে, ফুটবলারের অবস্থান বিষয়ক ডেটার সঙ্গে আল রিহলার সেন্সর থেকে পাওয়া ডেটা সমন্বয় করে আধা-স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি আর ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিকে (ভিএআর) সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তি। এ ছাড়াও ফুটবলারদের শরীর থেকে প্রায় ২৯টি ডেটা ট্রেকিং পয়েন্ট সংগ্রহ করা হয় মাঠের চারপাশে যে ১২টি ক্যামেরা রয়েছে তার মাধ্যমে। এতে ফুটবলারদের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অবস্থান নির্ধারণ করা যায় খুব সহজে। এ কারণে এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাচ্ছে কারো কাঁধ হয়তো অফ সাইড জোনের বাইরে চলে গেছে, হাতের কোনো অংশ বা পায়ের কোনো অংশ, জুতার ছোট্ট একটা অংশ বাইরে চলে গেলেও সেটি ধরা পরছে এবং অফ সাইড দেওয়া হচ্ছে।