*কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি

বরিশাল অফিস।। আদালতে চলমান মামলার নিস্ফতি না হওয়ার আগেই বিরোধীয় জমিতে গৃহহীন ও ভূমিহীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রাহুতকাঠী গ্রামের।

উপায়ন্তর না পেয়ে ভুক্তভোগী পরিবার বাবুগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করার পর আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে। ওই গ্রামের মৃত মুনসুর আলী কাজীর ছেলে মামলার বাদী কাজী মো. আনছার আলী গং ও সোনামদ্দিন হাওলাদারের ছেলে আব্দুল খালেক, মালেক হাওলাদার গংরা অভিযোগ করে বলেন, পৈত্রিক সূত্রে এসএ রেকর্ড অনুযায়ী রাহুতকাঠী মৌজার ৫ একর ১৮ শতক জমির মালিকানা হিসেবে তারা ভোগ দখল করে আসছেন। এরমধ্যে ভুলবশত বিএস রেকর্ডে ১ একর ৮৮ শতক সম্পত্তি তাদের নামে রেকর্ড আসেনি। ওই সম্পত্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নামে রেকর্ড আসলেও তারা পুরো সম্পত্তি ভোগ দখলে রয়েছেন। এনিয়ে ২০১৯ সালে আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করা হয় (যার নং-৩৯/২০১৯)। ওই মামলা এখনো আদালতে চলমান রয়েছে।

তারা আরও অভিযোগ করেন, গত ১৫ দিন পূর্বে ওই বিরোধীয় জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। বিষয়টি জানতে পেরে গত কয়েকদিন পূর্বে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয় (যার নং-৫৩/২০২৩)। আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়। যার নির্ধারিত সময় আগামী ৭ মে। কিন্তু এরইমধ্যে বিরোধী ওই জমিতে তড়িঘড়ি করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে।

ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হওয়ায় আনছার আলী, শিরিন আক্তার, আব্দুল খালেক, মালেক হাওলাদার ও ফরিদা বেগম বলেন, বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিস্ফত্তি না হওয়া পর্যন্ত একটি মহলের ইন্ধনে তড়িঘড়ি করে ঘর নির্মান করায় আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্ছিত হচ্ছি। তাই আমারা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমা বলেন, কারো ব্যক্তিগত জমিতে নয় বরং সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই দাগে অভিযোগকারীদের ৫২ শতক জমি আছে যা তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপদের জমিতে ঘর করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ওই দাগে সড়ক ও জনপদের জমি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি রয়েছে। একই দাগে নদীর পাড়ে আমাদের (সরকারি) জমি রয়েছে। সেই জমিতেই আশ্রয়নের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারি জমিতে কিংবা জমি অধিগ্রহন করেই আশ্রয়নের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কেউ যদি মামলা করে জমির মালিক দাবী করে তাহলে সে জমির মালিক হয়ে যায়না। আদালত যদি আদেশ দেয় ওই জমি ব্যক্তি মালিকানা, তাহলেই শুধু জমির মালিক তার জমি হিসেবে দাবি করতে পারবেন।

Share.
Exit mobile version