বিশেষ প্রতিনিধি।। নাইটগার্ডের ডিউটি করছিলেন মোহাম্মদ আরব আলী (৬৫)গভীর রাতে হঠাৎ ফোনে কল আসে। জিনের বাদশাহর পরিচয় দিয়ে ধর্মের নানা বিষয়ে কথা বলেন এবং আল্লাহর নামে শপথ করান। এরপর নানা সময়ে ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে ইসলামের নানা বিষয়ে মিথ্যা বুঝিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় কথিত জিনের বাদশাহ। এমন দুজন কথিত জিনের বাদশাহকে গ্রেপ্তার করেছে পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী। এর আগে বুধবার (১৪ জুন) রাতে পাবনা, গাইবান্ধা এবং বগুড়ার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পাবনার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন গাইবান্ধার গোবিন্ধগঞ্জ উপজেলার মিরুপাড়া এলাকার মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুর রশিদ (৫০) এবং একই এলাকার মৃত সাফায়াতুল্লাহ প্রামাণিকের ছেলে মো. আবু মিয়া (৩৮)। ভুক্তভোগী আরব আলী (৬৫) পাবনার চাটমোহর উপজেলার সারোরা পূর্বপাড়ার মৃত আছের উদ্দিনের ছেলে।

পাবনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী বলেন, গত প্রায় ছয় মাস পূর্বে মো. আরব আলী চাটমোহর নতুন বাজারে নাইট গার্ডের ডিউটি করাকালীন সময় গভীর রাত্রীতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জিনের বাদশাহ পরিচয় দিয়ে তাকে আল্লাহর নামে শপথ করান। এ সময় ধর্মীয়ভাবে ইসলামের নানা বিষয়ে মিথ্যা বুঝিয়ে ও প্রলোভন দেখায়ে তার ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব কথা কাউকে জানালে তার পরিবারের যেকোনো সদস্য মারা যাবে বলে ভয় দেখিয়ে বিষয়টি তাকে গোপন রাখতে বাধ্য করে। পরবর্তী সময়ে ১৩ জুন আবার কল করে জিনের বাদশাহ পরিচয় দিয়ে জায়নামাজ কেনার জন্য ২১ হাজার টাকা দাবি করে।

এরপর ভুক্তভোগী চাটমোহর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
তিনি জানান, অভিযোগের পর আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং মোবাইল ফোনের সিডিআর পর্যালোচনা করে পাবনা ডিবি টিম পাবনা, গাইবান্ধা এবং বগুড়ার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত জিনের বাদশাহ চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং যেসব বিকাশ নম্বরে টাকাসহ সব মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবত জিনের বাদশাহ পরিচয় দিয়ে গভীর রাতে নিরীহ সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এবং গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ও জিন দ্বারা প্রাণনাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিভিন্ন অজুহাতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিত বলেও জানান পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।

Share.
Exit mobile version