বিশেষ প্রতিনিধি।। চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় নিহত হন দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী। এ ঘটনায় করা মামলাটি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগে মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে ছিল আকবর শাহ থানা।
এদিকে চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নিশানসহ তিন আসামি গ্রেপ্তারের আগেই আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় মহড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা রানা।
তিনি বলেন, ‘এলাকায় আসামিদের মহড়ায় আমাদের পুরো পরিবার আতঙ্কের মধ্যে আছে।’গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) আলী হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রবিবার কোরবান আলী হত্যা মামলার সব কাগজপত্র আমরা বুঝে পেয়েছি। এরপর মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত শুরু করেছি আমরা।
যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন বিষয়ে কোরবান আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। আমরা পরিবারটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। যেকোনো বিষয়ে নির্ভয়ে তারা আমাদের জানাতে পারে।
চিকিৎসক কোরবান আলীর ওপর হামলার ঘটনায় ১২ আসামির নাম উল্লেখ করে গত ৬ এপ্রিল বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন ছেলে আলী রেজা রানা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাফায়েত, সংগ্রাম ও সাগর নামের তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আকবর শাহ থানা পুলিশ।
আকবর শাহ থানার ওসি গোলাম রব্বানী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
আলী রেজা রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাবাকে হত্যা করা হয়েছে প্রায় এক মাস হলো।
এরই মধ্যে মামলার প্রধান আসামি গোলাম রসুল নিশান, তার সহযোগী রাজু ও অপূর্ব গ্রেপ্তারের আগেই আদালত থেকে আগাম জামিনে বেরিয়ে এসে গত শনিবার আমাদের এলাকায় মহড়া দিয়েছে। এলাকার লোকজনকে বাবার হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছে। আমরা এখন আতঙ্কে আছি, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’
গত ৫ এপ্রিল বিকেলে আকবর শাহ থানা এলাকার পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকায় চিকিৎসক কোরবান আলীর ছোট ছেলে আলী রেজা রানাকে মারধর করে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ঘটনাটি দেখে ছেলেকে রক্ষায় এগিয়ে গিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলার শিকার হন কোরবান আলী। গুরুতর আহত অবস্থায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ১০ এপ্রিল মারা যান তিনি।