রাঙা প্রভাত ডেস্ক:- তৃণমূল থেকে উঠে আসা গণমানুষের নেতা মো. আবদুল হামিদ এর আজ ১ জানুয়ারি ৭৭তম জন্মদিন। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও জীবনদর্শনকে আত্মস্থ করে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ব্যক্তি, যিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির আসন অলংকৃত করেন।

কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত মিঠামইন উপজেলার দুর্গম কামালপুর গ্রামে ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা হাজী মো. তায়েব উদ্দিন, মা তমিজা খাতুন। হাওরের কাদা-মাটি-জলে গড়াগড়ি খেয়ে বেড়ে ওঠা আবদুল হামিদ নিকলী জিসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে একই কলেজে বিএ শেষে ঢাকা ল’ কলেজ থেকে অর্জন করেন এলএলবি ডিগ্রি।

১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। উদয়াস্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে অল্পদিনেই কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের একচ্ছত্র নেতায় পরিণত হন তিনি। এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সস্নেহ সান্নিধ্য লাভ করেন।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত পছন্দে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিস্তীর্ণ হাওরের দুর্গম এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে (ময়মনসিংহ-১৮) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পে এবং সে সময়ে সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (মুজিব বাহিনী) সাব-সেক্টর কমান্ডার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ।

১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্র্নিবাচিত হন। স্বাধীনতার পর তার নির্বাচনী এলাকা থেকে ৭ বার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর চরম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও আবদুল হামিদ তার বিশ্বাস এবং আদর্শের জায়গা থেকে তিলমাত্র বিচ্যুতি হননি। এ কারণে ১৯৭৬ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। তবে কোনো নিপীড়নই তাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরাতে পারেনি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। পরে একই সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পান। জাতীয় সংসদে সব দলের কাছেই হয়ে ওঠেন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে আবারও তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন। দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর আবদুল হামিদ ২০তম রাষ্ট্রপতি হন। গত বছরের এপ্রিলে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বাধীনতা পদক লাভ করেন তিনি।

Share.
Exit mobile version