বরিশাল অফিস:- সুদের টাকার জন্য এক ব্যক্তির মরদেহ দাফনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুদি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১০ ঘন্টা পর শনিবার দিবাগত রাতে মৃত ব্যক্তির মরদেহ দাফন করেছেন তার স্বজনরা। মৃত মোঃ নুর মোহাম্মদ তালুকদার (৮২) জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।

জানা গেছে, শুক্রবার ভোর রাতে নগরীর এক আত্মীয়ের বাসায় বসে বাধ্যর্কজনিত করেণ নুর মোহাম্মদ তালুকদারের মৃত্যু হয়। তার (নুর মোহাম্মদ) বড় পুত্র চেঙ্গুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল তালুকদার জানান, গৌরনদী উপজেলার নন্দনপট্টি গ্রামের চিহ্নিত সুদীমহাজন আলী হোসেন বেপারী, শাহীন ঘরামী ও বাঙ্গিলা গ্রামের খোকন বেপারী নামের তিন সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার বড় বোন দোলন বেগম সাত বছর আগে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা সুদে আনেন। কিছুদিন পর তার বোন বিদেশে চলে যাওয়ায় ওই টাকা পরিশোধের দায়িত্ব নেন তার বাবা। গত পাঁচ বছরে ১০ লাখ টাকা পরিশোধের পরেও ওই তিন সুদি ব্যবসায়ী তাদের কাছে আরও ১৩ লাখ টাকা দাবি করে। একইসাথে তারা তার বাবাকে আসামি করে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করে। একটি মামলায় তার বাবার পক্ষে রায় হয়। পরে তার বাবা নুর মোহাম্মদ সুদি মহাজনদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প উদ্ধারের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। যা আদালতে বিচারাধীন।

তিনি আরও জানান, এদিকে নুর মোহাম্মদ তালুকদারের মৃত্যুর খবর পেয়ে সুদি ব্যবসায়ী শাহীন ঘরামী ও খোকন বেপারী তাদের বাড়িতে গিয়ে টাকা পরিশোধ না করে মরদেহ দাফনে বাঁধার সৃষ্টি করেন। মরদেহ দাফনের পর অন্য ভাই-বোনদের নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে চাইলে সুদি ব্যবসায়ীরা টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মরদেহ দাফন করতে দেবেন না বলে হুমকি প্রদর্শন করে। এ কারণে শনিবার দুপুরে তার বাবাকে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে দাফন করতে পারেননি।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে একই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও রাজিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার বলেন, নুর মোহাম্মদের ছেলে-মেয়েদের এ বিষয়টি সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরাও তাদের সহায়তা করবো।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, টাকা পয়সার লেনদেন থাকতে পারে, তা পরিশোধ বা আদায়ের অনেক ব্যবস্থা আছে। তাই বলে সুদের টাকার জন্য মরদেহ দাফনে বাঁধা দেওয়া বর্বরোচিত। তিনি আরও বলেন, সুদের টাকার কারণে মরদেহ দাফনে বাঁধা দেয়ার খবর পেয়ে ওই গ্রামে পুলিশ পাঠিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Share.
Exit mobile version