জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক:- জেলার বাবুগঞ্জে প্রকাশ্য দিবালোকে এক গার্মেন্টস কর্মীর নির্মাণাধীন রান্নাঘরের দেয়াল ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের করার জের ধরে বিকেলে আবার মহিলাসহ ৩ জনকে পিটিয়ে জখম করেছে তারা। বৃহস্পতিবার উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেরদিয়া (নতুনচর) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ভূতেরদিয়া (নতুনচর) গ্রামের মৃত আক্তার আলী আকনের ছেলে রুহুল আমিন আকনের সাথে জমিজমা নিয়ে তার বড়ভাই সালাম আকনের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি সঠিকভাবে ভাগবন্টন না করে জোর করে সিংহভাগ সম্পত্তি একাই ভোগদখল দখল করে আসছিলেন বড়ভাই সালাম আকন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চলমান বিরোধ নিষ্পত্তিতে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও সালাম আকন তার সন্ত্রাসী ২ ছেলের দাপটে তা অগ্রাহ্য করে আসছিলেন। চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টসে কর্মরত রুহুল আমিন ছুটিতে বাড়িতে এসে তার রান্নাঘরের দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন সালাম আকন ও এলাকায় জল্লাদ নামে পরিচিত তার স্ত্রী সাহেদা বেগম। বৃহস্পতিবার সকালে সালাম আকন ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগম তাদের ছেলে রাসেল এবং ফয়সালকে সঙ্গে নিয়ে কুড়াল, লোহার রড ও শাবল দিয়ে ছোটভাইয়ের নির্মাণাধীন রান্নাঘরের দেয়াল ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় রুহুল আমিন বাবুগঞ্জ থানায় এবং সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করলে আরো ক্ষিপ্ত হন সালাম আকন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের বাড়িতে সাংবাদিক আসার ঘটনার জের ধরে সাংবাদিক চলে যাওয়ার পরেই লাঠিসোটাসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছোটভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালান সালাম আকন গংরা বলে জানান ভুক্তভোগী রুহুল আমিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, আমার ভাসুরের নেতৃত্বে সকালে সন্ত্রাসী হামলা আমাদের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। থানা এবং সাংবাদিকদের জানানোর অপরাধে বিকেলে তারা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এসময় আমি ও আমার ছোট দেবর কামাল আকন তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদের ৩ জনকেই বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে তারা। তাদের হামলায় গুরুতর আহত কামাল আকনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রুহুল আমিন আকন জানান, চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে চাকুরি করার কারণে আমি বাড়িতে না থাকায় বিভিন্ন সময় আমার বড়ভাই সালাম আকনের নেতৃত্বে আমার ভাতিজারা আমার স্ত্রীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে এবং একাধিকবার তার শ্লীলতাহানি করেছে। এছাড়াও আমি চট্টগ্রাম থাকার সুযোগে মাসখানেক আগে তারা আমার বসতঘরের দরজা ভেঙে বাড়ির বিভিন্ন মালামাল লুট করেছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল আমিন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত সালাম আকন বলেন, আমার বাবা মারা যাবার পরে সমস্ত সম্পত্তি আমি রক্ষণাবেক্ষণ করেছি। তাই বাড়িতে আমার হক বেশি। আমি যে ভাইকে যতটুকু দেবো তাকে তাই নিতে হবে। তবে বাপের সম্পত্তির ওয়ারিশ আপন ভাইকে আপনি বঞ্চিত করতে চান কীভাবে-এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সালাম আকন।

এ ঘটনায় বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, উভয় পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে সেহেতু স্থানীয় মীমাংসা করাই উত্তম। তবে উভয় পক্ষ মামলা করতে চাইলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.
Exit mobile version