প্রতিটি বায়বীয় দাগ কবিতা

মেহেদী মেহেবুব

“জিভ- আলজিভের ঘর্ষণে উর্বর লালা নিঃস্বেরিত প্রতিটি শুদ্ধ শব্দ কবিতা।

জীবনদর্পণে কোমল ব্যথাতুরা অস্বচ্ছ প্রতিটি বায়বীয় দাগ কবিতা।

আমাদের যাপিত সংসার, দারিদ্রোর ঠুং ঠাং প্রতিটি কর্কশ আওয়াজ কবিতা।

পিঠে পেট লেগে যাওয়া চো চো খিদে অদ্ভুদ শব্দ কবিতা।

প্রেমিকের মৃদুলা অভিমান, চোখরাঙানি; ভাইবোন গল্পের সম্পর্কছেদ চিঠির প্রতিটি বর্ণমালা কবিতা।

সাতাশ অব্দ পর্যন্ত স্বজনের ঘৃর্ণা; আমাদের অশ্রু।
অবয়ব ভিজে যাওয়া প্রতিটি উষ্ণ নোনা কবিতা।

একাকীত্ব জীর্ণ ঘরে অসুস্থ পিতার গগণবিদারী আর্তনাদ। তিল তিল বেড়ে ওঠা মৃত্যুদ্বার কবিতা।

রাত্রি দ্বি- প্রহরে দুঃস্বপ্ন। মায়ের মরা ঘুম।
ঘুম ভাঙ্গা অসহায় প্রতিটি অন্তজ্বালা কবিতা।

কবিতারা মরে গেলে মানুষ বাঁচে।
না।

কবিতারা কথা কয়, মানুষের কথা। ইতিহাসের কথা।
আমাদের কথা। জীবনের কথা। মরনের কথা।

জীবশ্ন প্রেম বাঁচাবার তাগিদ..

কবিতাদেরও খুব ইচ্ছে,” আমি মানুষ হই।

লামচর ক্ষুদ্রকাঠি
০৬/০১/২০১৯

বিষন্ন পৌষ, নিথর যন্ত্রণা

“এই যে পৌষের কত শীত,
উঠোনের উনুন ছেড়ে হয়েছে অতীত।
মা নেই,
উৎসব নেই,
মমতা নেই,
পিঠাপুলি নেই।
সন্ধ্যার আড্ডা টা নেই,
রং চায় উষ্ণতা নেই।
ভাইবোন কাড়াকাড়ি নেই,
দারিদ্র সম্পদের দরাদরি নেই,
কত কিছু যে নেই,
তার হিসেবও নেই।

অদ্ভুদ গুহায় লুকিয়েছে সব।

কোন ভিন্নতা নেই,
আমিও এই পথে আসছি।
মনে পড়ে মা, কত কথা,
পার্থিব লেনদেন মমতার খুনসুটি,
চাল ডাল ভাজি আর মটরশুটি।

আজ হিসেব মিলছে না, মোটেই।

খুব মনে পড়ে, মা।
বড়জোড় কত আর্শীবাদ,
সন্ধ্যা বকুনিটা খুব মিস করছি।
স্যাঁতসেঁতে ছবিটা কিস করছি।

ভালো থেকো মা।
জানুয়ারী এলেই মোনে পড়ে,
বিষন্ন পৌষ, নিথর যন্ত্রণা।
আড়ালে অনুভবে মা।
আছো, থাকবেই…….।।

০৩/০১/২০১৯ ইং

সন্ধ্যা আমার বোন

” হাতটা কাঁপছে!

দেখুন, লিখতে পারছিনা।
সন্ধ্যা আজও আসেনি,, পাশে এসে বসেনি একমাত্র ভাই সকালের মুখোমুখি।

সাতাশ সন্ধ্যা নামল, উঠোন নিরবতায় ভারী হল, কেউ এসে আমাকে ভাই বলেনি…।।

ভীষণ ব্যস্ততায় সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা, দিনের আলোতে কখনও দেখিনে তো, তাই ওর নাম রেখেছিলাম সন্ধ্যা।
কেমন হয়েছিল?

ভাল বলবেন, নিশ্চয়ই।

সন্ধ্যা ভাল মেয়ে ছিল, কারোর বোন।
উর্বর সম্পদ ছিল তারুন্যের।
দোষও ছিল- সরলতা। তারপরও…

সন্ধ্যার আলোর কমতি ছিলনা,
কেবল আঁধারটাই পেয়ে বসল বেশী, নাছোরবান্দা।
ও ঠকায় নি। জয় জয়কার প্রেমমাল্য পরিয়েছে গলায়।
আঁধার টা খুশি হয়েছে, পূর্ণিমা এলেই নাচন ধরে। এখনও..

সন্ধ্যা ভালো নেই। কালো হয়ে গেছে। গভীর রাত।
শুনেছি একমাত্র ভুলের পরিধির মধ্যেই নিত্য দগ্ধ হয় সন্ধ্যা।

ক্ষতো নেই, অথচ কলতানি বেয়ে পড়ে…
ভিজে যায় স্বজন।

কেউ দ্যাখে না, এমনকি
আপন আঁধার নিজেও।।

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ইং!
লামচর ক্ষুদ্রকাঠি, বরিশাল!

Share.
Exit mobile version