রাঙা প্রভাত ডেস্ক:- নামাজী ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া নিষেধ। নামাজী ব্যক্তির সামনে দিয়ে মানুষের চলাচলের সম্ভাবনা থাকলে নামাজ শুরুর আগে সুতরা সামনে রেখে নামাজে দাঁড়ানো সুন্নত। সুতরা বলে কোনো কিছুর আড়ালকে। কোনো বড় মসজিদে নামাজে দাঁড়ালে সামনে একটি বস্তু (দেয়াল, পিলার, লাঠি ইত্যাদি) রাখা জরুরি।
যার ফলে নামাজ অবস্থায় সামনে দিয়ে লোকজন চলাফেরা করতে না পারে। সুতরা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সুতরা ছাড়া নামাজ পড় না।’ -আবু দাউদ
এখন প্রশ্ন হলো নামাজী ব্যক্তি সুতরা কোথায় রাখবে এবং সুতরা কিসের হবে? এর উত্তরে বিজ্ঞ আলেমরা বলেন, সুতরা হতে হবে মাটি থেকে অল্প উঁচু কোনো বস্তু এবং তা রাখতে হবে সিজদার জায়গার অল্প সামনে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে অনেক ধরনের সুতরার কথা প্রমাণিত।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদের খুঁটিকে, ফাঁকা ময়দানে বর্শা গেড়ে, নিজের সওয়ারি উটকে আড়াআড়িভাবে দাঁড় করিয়ে সুতরা বানাতেন। এছাড়াও রাসূল (সা.) বিভিন্ন সময় উটের পিঠে বসার জিনপোশ (গদি), গাছ ও শোয়ার খাটকে সামনে রেখেও নামাজ পড়েছেন।
কেউ যদি নামাজীর বরাবর সামনে থাকে, তাহলে সেখান থেকে চলে যাওয়ার সুযোগ আছে। এটা নামাজের সামনে দিয়ে অতিক্রম করার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে বিনা প্রয়োজনে এমন করা ঠিক নয়। সুতরা বিষয়ে কয়েকটি মাসলা হলো—
১. ইমামের সামনে সুতরা থাকলে মুক্তাদিদের জন্য পৃথক সুতরার দরকার নেই। তবে কোনো ইমাম যদি সুতরা না দেন, তাহলে মুক্তাদির সুতরা দিতে হবে।
২. সুতরা মাটি থেকে অল্প উঁচুতে হতে হবে। কিছু না পেলে দাগ কেটে দেয়ার প্রচলন আছে, এটা ঠিক নয়।
৩. জায়নামাজের শেষ প্রান্তকে সুতরা বলে গণ্য করা যাবে না।
৪. সুতরার সোজাসুজি না দাঁড়িয়ে একটু ডানে-বামে দাঁড়ানোর কথা বলা হয় এটাও ঠিক নয়।
৫. বিনা সুতরায় নামাজ পড়লে কেউ সামনে দিয়ে গেলে নামাজ নষ্ট হয় না। কিন্তু নামাজের ক্ষতি হয়। মানুষ চলাফেরা করতে পারে, এমন স্থানে সুতরা না রেখে নামাজ পড়া গুনাহের কাজ।
৬. যে মসজিদের প্রশস্ততা ৪০ হাতের বেশি, এমন মসজিদে নামাজরত ব্যক্তির দুই কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয। অর্থাৎ নামাজীর কাতারসহ মোট তিন কাতার দূরত্ব দিয়ে যাওয়া যাবে। এর চেয়ে ছোট মসজিদে মুসল্লির সামনে দিয়ে সুতরা ছাড়া অতিক্রম করা যাবে না।
নামাজীর সামনে দিয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহের কাজ। এ কাজ থেকে সবার বিরত থাকা উচিৎ।