রাঙা প্রভাত ডেক্স: বরিশালে একের পর এক বাড়ছে করোনাজয়ীর সংখ্যা। বিভাগের ছয় জেলায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১২৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৪৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। শেষ দু’জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর শূন্য হয়ে গেছে বরগুনা সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড। শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে চারজন আছেন। অন্য জেলাগুলো থেকেও একের পর এক করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এক-তৃতীয়াংশের বেশি করোনা রোগী সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যাও কমছে।

 

বরিশাল জেলায় গত শুক্রবার সর্বশেষ করোনা শনাক্ত হয়। বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত জেলা বরগুনাতে দু’দিনে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়নি। এসবের পাশাপাশি বরিশালের পিসিআর ল্যাবের কর্মকর্তারাও আরেকটি সু-খবর দিয়েছেন। ৮ এপ্রিল যাত্রা শুরু হওয়ার পর প্রতিদিন ৯৪টি করে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করা হলেও রোববার এখানে ১৪০ জনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামীর দিনগুলোতেও এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে তারা আশা করেন।

 

৮ এপ্রিল বরিশালে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ২৬ দিনে বিভাগের ছয় জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৭ জনে। বরিশালে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রথম দিকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৯৪ জনের পরীক্ষা করা হতো। ল্যাবের দায়িত্বে থাকা বরিশাল মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ভাইরোলজিস্ট ডা. আকবর করিম জানান, এখানে এক শিফটে কাজ করতে কমপক্ষে ৩৬ জন টেকনোলজিস্ট দরকার। কিন্তু কাজ করছেন মাত্র আটজন। এর মধ্যে আবার তিনজন হাঁপানি ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত। এর সঙ্গে রয়েছে চিকিৎসক সংকটও। এর পরও পরীক্ষার আওতা বাড়ানো হয়েছে। রোববার এ ল্যাবে ১৪০ জনের করোনা শনাক্তের পরীক্ষা হয়েছে।

 

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, শুরুর দিকে করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে অনেক রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে মাত্র চারজন চিকিৎসাধীন। এ চারজন অবশ্য করোনা পজেটিভ। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা ইউনিট স্থাপনের পর থেকে মোট ১১৭ জন ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ২৭ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। ২৭ জনের মধ্যে দু’জনকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। ২১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার জানান, রোববার পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় করোনা আক্রান্ত ১২৭ জনের মধ্যে বরিশালের ৪১ জন। এছাড়া বরগুনায় ৩২, পটুয়াখালীতে ২৭, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে ১১ জন করে ২২ জন এবং ভোলায় ৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশালে ২৬, বরগুনায় ১৪, পটুয়াখালীতে ৪ এবং পিরোজপুরে একজনকে করোনা মুক্তির সনদ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

 

সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, শনিবারের পর বরিশাল জেলায় আর কেউ করোনা শনাক্ত হয়নি এটি আমাদের জন্য একটি আশার খবর। আক্রান্তের যে হিসাব আমরা দিচ্ছি সেই ৪১ জনের মধ্যেই ২৬ জন সুস্থ হয়েছে। সেই হিসেবে বর্তমানে জেলায় করোনা পজেটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা রোগীর সংখ্যা ১৫। সুস্থ হওয়া রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

Share.
Exit mobile version