রাঙা প্রভাত ডেক্স: মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃহস্পতিবার বাদ যোহর থেকে সুস্থ মুসল্লিরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন। বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামারাও পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর জোর দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি সরকার সার্বিক বিবেচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ ঘোষণার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জারি করা নির্দেশ অনুসরণ করে বিশেষ সতর্কতামূলক বিষয় মেনে চলার শর্তে ৭ মে যোহরের ওয়াক্ত থেকে সুস্থ মুসল্লিদের মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

 

১২ দফা শর্তসাপেক্ষে মসজিদগুলো সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জামাতে নামাজের জন্য অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

১. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুণাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।

২. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।

৩. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ তিন ফুট পর পর দাঁড়াতে হবে।

৫. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।

৬. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদের ওজুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

৮. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।

৯. উল্লিখিত শর্ত পালন সাপেক্ষে প্রত্যেক মসজিদে সর্বোচ্চ পাঁচজন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ইতেকাফ এর জন্য অবস্থান করতে পারবেন।

১০. করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১১. এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার হবে।

১২. খতিব,  ইমাম ও  মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব নির্দেশনা লংঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃখলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

 

এর আগে, ৬ এপ্রিল মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে সময় নির্দেশ দেওয়া হয়, শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমরা মসজিদে নামাজ আদায় করবেন।  জুমার জামাতে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ হয়।  মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ অনধিক ৫ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। বাইরের মুসল্লি মসজিদে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।

 

এরপর ২৪ এপ্রিল পৃথক আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তারাবি নামাজের বিষয়ে বিধি নিষেধ আরোপ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বলা হয়, খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদিম ও দুই জন হাফেজসহ সর্বোচ্চ ১২ জন রমজান মাসে মসজিদে এশা ও তারাবি’র নামাজে অংশ নিতে পারবেন।

Share.
Exit mobile version