
★ শিকারিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মো.মনিরুজ্জামান চৌধুরী, কালিয়া (নড়াইল)।। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী এলাকার কলাবাড়িয়া, খাশিয়াল বিলসহ বিভিন্ন খাল ও বিলে প্রতিবছর শীত মৌসুমে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। তবে এবছর সেই দৃশ্য আনন্দের বদলে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। শিকারিদের অবাধ শিকার, ফাঁদ ও জালের কবলে পড়ছে পাখিরা। আইন থাকা সত্ত্বেও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। এতে শুধু অতিথি পাখিই নয়, পুরো জলাভূমি-নির্ভর জীববৈচিত্র্যই চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খাল-বিলের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ ও লোহার ফাঁদ, পানি-মাঝে টানা জাল এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে পাখি শিকার করা হচ্ছে। ভোররাত ও সন্ধ্যার পর শিকারিরা বেশি সক্রিয় থাকে।
স্থানীয়রা জানান, কেউ কেউ শখের বশে শিকার করলেও অনেকের উদ্দেশ্য পাখি বিক্রি করে আর্থিক লাভ তোলা।
স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইন থাকলেও দোষীদের ধরার ক্ষেত্রে স্থানীয়দের পূর্ণ সহযোগিতা আমাদের খুবই প্রয়োজন।
কালিয়া উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন,
“অতিথি পাখি শিকার বেআইনি। আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই, তবে স্থানীয়দের সহযোগিতা না পেলে শিকারিদের ধরা কঠিন। জনগণ তথ্য দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।”
পরিবেশবিদরা মনে করান, অতিথি পাখি নিধন শুধু একটি প্রজাতির ক্ষতি নয়। জলাভূমির খাদ্যচক্র, পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এদের ভূমিকা অপরিসীম। এভাবে চলতে থাকলে নড়াগাতীর খাল-বিল শীত মৌসুমে পাখিশূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সচেতন মহল বলছেন, শুধু প্রশাসনিক অভিযান যথেষ্ট নয়। গ্রামভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী নজরদারি, গণসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে শিকার রোধ করা সম্ভব।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও যুবসমাজের সহযোগিতায় পাখি রক্ষা কার্যক্রম সফল হতে পারে।
প্রকৃতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এখনই উদ্যোগ না নিলে নড়াগাতীর খাল-বিল থেকে হারিয়ে যাবে অতিথি পাখির কিচিরমিচির।

