কাঠগোলাপ এবং কয়েকটি কবিতা
১
প্রিয়তমা;
তোমার নাকে-
কাঠগোলাপ ফুল।
২
এমন এক বৃষ্টির দিনে,
তুমি এসো নুপুর পায়ে।
বহুদিন হল-
বৃষ্টিতে ভিজি না;
নুপুরের রিমিঝিমি সুর শুনি না।
৩
সভ্যতার বিবর্তনে;
গ্রাম যখন বদলে যাচ্ছে শহরে;
ভেবেছিলাম- এবার কাব্য যুগের অবসানের পালা।
নদীর কল কল সুর;
কাঁচা মেঠো পথে, পায়ে চালিত ভ্যানের শব্দ;
সকাল বেলায় মক্তবে মক্তবে কোর-আনের কলরব;
শীতের সকালে খেজুর রসের ঘ্রাণ;
রোদ পোহাতে থাকা ব্যস্ত রমনীদের গল্পের আসর;
খালে কিংবা নদীতে কিশোরের ঝাঁপিয়ে পড়া;
এইসব ফুরাতে’ই ভেবেছিলাম-
কবিতা লেখার প্রেরণা বুঝি ফুরিয়ে এলো।
তারপর একদিন;
এই কংক্রিট শহরে তোমার দেখা।
বুঝতে পারি,
শহরেও-
রাত আসে;
মেঘ ভাসে;
রোদ ওঠে;
বৃষ্টি ঝরে;
জোছনায় জোছনায় আকাশ হাসে।
এই শহরে;
তোমাকে ভালবেসে-
আজও কবিতা বেঁচে আছে।
৪
তোমাকে প্রথমবার দেখে,
ইচ্ছে হল শ্রেষ্ঠ কবিতা লিখব;
অন্তত- আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কবিতা।
চাইলেই কি সবাই সবকিছু পারে?
তারপর ইচ্ছে হল;
কোন এক বসন্ত বিকেলে,
জীবনানন্দ দাশের প্রিয় শহরের তীর ঘেঁষা
কীর্তনখোলা’র পাড়ে- তোমায় নিয়ে হাঁটতে বের হব।
তোমার নিশ্বাসের শব্দে ভেসে আসবে-
বাতাসের শীষ ধ্বনি;
তোমার ঠোঁট জুড়ে হাসির শব্দে মিশে যাবে-
কীর্তনখোলা বিধৌত স্রোতের কল কল সুর।
যখন প্রথমবার বনললতা সেন পড়ি,
খুব অবাক হয়ে ভেবেছি-
পাখির নীড়ের সাথে চোখের উপমা কতখানি প্রাসঙ্গিক?
আজ বুঝতে পারি,
তোমার স্নিগ্ধ চোখ-
নীড় হয়ে ধারন করে হাজারও স্বপ্ন পাখি।
আচ্ছা,
একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা লেখা কি খুব বেশি জরুরী।
আমার হৃদয়ে অনুরত অনুভব কি-
তোমায় নিয়ে লেখা এক পৃথিবী কবিতা নয়?
৫
কোন এক বসন্ত বিকেলে;
রোদে ঝলসানো জিন্স প্যান্ট,
আর বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবী শরীরে জড়িয়ে-
এই রাজপথে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে যাব তোমার শহরে।
একশ একটি হলুদ-সাদা কাঠগোলাপ হাতে দাঁড়াবো-
তোমার চোখে চোখ রেখে।
সেদিন,
তুমি কি আমায় কবিতা শোনাবে?