মেহের আমজাদ ,মেহেরপুর: মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে না পারায় মেয়েদের বাল্য বিয়ের অনুমতি চেয়ে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন এক মা।
স্বামী ভ্যান চালক। কিছুটা বাউন্ডালে স্বভাবের হওয়ায় ঠিকমত রোজগার করতে পারেন না। স্বামীর অতি সামান্য আয়ে সংসার যেন চলছেই না। তার উপর তিন মেয়ের লেখাপাড়ার খরচ ও ভরণপোষণ জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই মেয়েদের বিয়ে ছাড়া আর বিকল্প কিছুই চিন্তা করতে পারছেননা ওই মেয়েদের হতভাগ্য মা। তিনি শুনেছেন বাল্য বিয়ে দিলে জেল হবে। তাই বিয়ের অনুমতি নিতে চার মেয়েসহ সোমবার (২০-০৭-২০২০) বিকেলে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনির অফিসে হাজির হন মেয়েদের মা। মেয়েরা উপজেলার একটি বালিকা বিদ্যালয়ে বড় মেয়ে ৮ম শ্রেণিতে, মেজ মেয়ে ৭ম শ্রেণিতে, সেজ মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করে এবং ছোট মেয়ে মায়ের কোলে। মেয়েদের কাছে তাদের ইচ্ছা জানতে চাইলে সকলেই একবাক্যে বলে, তারা লেখাপড়া শিখে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চায়। তাদের মা বলেন, একটু সহযোগিতা পেলে তিনি কখনও মেয়েদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের কথা চিন্তা করতেন না। লেখাপড়া খরচ, পোষাক, স্কুলের ইউনিফর্ম, প্রাইভেট শিক্ষকের বেতন ইত্যাদি খরচ যোগাড় করা এখন অসম্ভব। তিনি আফসোস করে বলেন এসব বিষয়ে একটু সহযোগিতা পেলে তিনি তার মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে অনেক বড় করতেন! এমন ঘটনার বর্নানা দিয়ে সোমবার বিকেলে মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গণি তার ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, স্ট্যাটাসটি নজরে আসলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয় ঘটনাটি। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গণি বলেন, মেয়েদের যেন বাল্য বিয়ে না দেওয়া হয় সেই শর্ত সাপেক্ষে মেয়েদের ৮ মাসের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ, পোশাকের খরচ, ইউনিফর্মের খরচ নগদ প্রদান করা হয়েছে । শর্তের অংশ হিসেবে তারা তিন বোন আমাকে কথা দিয়েছে- এখন থেকে আরও ভাল করে লেখাপড়া করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাদের মা কথা দিয়েছেন- মেয়েরা লেখাপড়া শিখে বড় না হওয়া পর্যস্ত বিয়ের কথা আর চিন্তাই করবেন না। শর্ত দুটি পূরণ সন্তোষজনক বিবেচিত হলে পরবর্তীতে আরও সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।