আজ (২৬ আগষ্ট) দুস্থ, দরিদ্র, অসহায়, অবহেলিত মানুষের মুক্তির দুত মাদার তেরেসা’র জন্মবার্ষিকী।
অসহায় ও দুস্থ মানুষের ভরসার এবং মমতাময়ী মায়ের প্রতিচ্ছবি মাদার তেরেসা ছিলেন একজন আলবেনিয়ান-বংশোদ্ভুত ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী, যাঁর আসল নাম ছিল আনিয়েজ গঞ্জে বয়াজিউ।
দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি দরিদ্র, অসুস্থ, অনাথ ও মৃত্যু পথযাত্রী মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
মাত্র পাঁচ টাকা মূলধন নিয়ে তিনি যে মিশনারীজ অব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলেন, তা আজ সারা বিশ্বে সম্প্রসারিত হয়েছে শত শাখা-প্রশাখায়।
মানবতার সেবার স্বীকৃতি স্বরুপ শান্তির জন্য মাদার তেরেসাকে ১৯৭৯ সনে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়। নোবেল পুরষ্কারের ১৫ লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য পুরস্কারের প্রায় এক কোটি টাকা সবই তিনি দান করেন মানবতার সেবায়।
১৯২৯ সালে ভারতে এসে দার্জিলিঙে নবদীক্ষিত হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৯৩১ সালের ২৪ মে তিনি সন্ন্যাসিনী হিসেবে প্রথম শপথ গ্রহণ করেন। এই সময় তিনি মিশনারিদের পৃষ্ঠপোষক সন্ত Thérèse de Lisieux –এর নামানুসারে টেরিজা নাম গ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। একাত্তরের ডিসেম্বরে মাদার তেরেসা খুলনা ও ঢাকার কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় পাকসেনারা পশুর মতো তান্ডব চালিয়েছে তা দেখেন। এসব ক্যাম্পে পাকসেনারা দিনের পর দিন বাংলাদেশি নারীদের ওপর অত্যাচার করে আসছিল।
এসব দেখে ঢাকায় তিনি খোলেন ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটিজ’-এর একটি শাখা। তখন বেশির ভাগ যুদ্ধশিশুকে দেখা হতো ঘৃণার চোখে, তাদের ফেলে দেয়া হতো ডাস্টবিনে। মাদার তেরেসা ওই সময় পরম মমতায় যুদ্ধ শিশুদের কোলে নিতে থাকেন। তাদের পাঠিয়ে দেন কলকাতা, ফ্রান্স ও সুইডেনে।
এই মহীয়সী নারী বৃদ্ধ বয়স পর্যান্ত জনসেবার নিমিত্তে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অক্লান্তভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
এই গুনিজনের জন্মদিনে তাকে স্বরন করছি বিনম্র চিত্তে।
লেখক, বিশেষ প্রতিবেদক
প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সম্ভাবনার কলসকাঠী