পুরানো চিঠি
লিটু হালদার
দীর্ঘ দিন পর চিঠির ভাজটা খুললাম
চোখের সামনে ভেসে এলো কতো স্মৃতি।
সেদিন কত আপন ছিলে তুমি
আমাকে ছাড়া তোমার এক মুহুর্ত কাটতো না
তুমি বলে ছিলে-
দেবতার অশেষ কৃপা যে
আমি তোমাকে খুঁজে পেয়েছি
তিনি বোধ হয় আমার জন্যই তোমাকে সৃষ্টি করেছে।
চিঠির প্রতিটি শব্দ আমাকে তীরের মত বিদ্ধ করে
ঠিক যেন ভীষ্মের শরশয্যায় পরে আছি।
সেই বাল্যকাল হতে এক সাথে বেড়ে উঠা
এক সাথে খেলা, লেখাপড়া
তারপর একদিন তুমি পাড়ি জামালে শহরে।
কালে কালে হয়ে উঠলে ভদ্র সমাজের একজন
নাগরিক জীব সভ্যতার অগ্রদূত
চার পাশে কতো কতো মানুষের
অভ্যর্থনায় ভেসে গেছে আনন্দের উচ্চ শিখরে
বিলাস বহুল বাড়ি, অর্থ বিত্ত ঐশ্বর্যের প্রাচুর্যে।
তুমি মিশে গেছো আকাশের অসীমের সীমায়
আজ তোমাকে খুঁজে পাই না।
শত লোকের ভিড়ে এই জীর্ণ শীর্ণ
ক্ষুদ্র বন্ধুটিরে কেবা মনে রাখে।
তুমি কৃত্রিম সুখের সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছ
কেউ তোমাকে ভালবেশে ছিল
তোমার জন্য হৃদয়ের মণিকোঠায় আসন পেতে ছিল
তা তোমার মনে নেই।
তুমি আজ অর্থের মোহে ভুলে গেছো আপন পর
সেই ধূলি খেলার মাঠের রাখাল প্রতি সন্ধ্যায় যে বাঁজিয়ে যায় মিলন সুর
তোমার কর্ণ কুহরে তা প্রবেশ করবে না কোনদিন।
হে বন্ধু ভালো থেকো
যেদিন তোমার বিত্ত বৈভব ঐশ্বর্য
তোমাকে সুখ দিতে পারবেনা
সেইদিন চলে এসো এই ধনহীন দীন বন্ধুটির কাছে।
তোমাকে আর কিছু না দিতে পারি
ভালবাসার স্নেহটুকু তো দিতে পারব।