রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। গত ১২ বছরে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত হয়েছে। আরও প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ওপর খাতওয়ারি আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা পুরোপুরি এখনো আসেনি। এ বিষয়টি পরিকল্পনায় প্রাধিকারে আসা খুবই জরুরি। নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের সঙ্গে শুধু সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় জড়িত নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা জড়িত। পরিকল্পনা দলিলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে সব অংশীজনের সমন্বয়ের বিষয়টি আনা যেতে পারে।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা এখন আমাদের বড় দুর্ভাবনা। এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ সড়কের। ২০৩০ সালের মধ্যে ৬ লেনের মেট্রোরেল রুট নির্মাণের সময়বদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে একটি রুটের কাজ এগিয়ে চলছে, দুটি রুটের ভৌত কাজ শিগগিরই শুরু হবে এবং বিআরটি প্রকল্পের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
কাদের বলেন, মহানগরীতে পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস রুট রেশনালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এফিশিয়েন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের জন্যও সমন্বয় জরুরি।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মাসেতুতে ইতোমধ্যে ৩৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে, যা দৃশ্যমান এখন ৫.১ কিলোমিটার। বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলেরও দুটি টিউবের মধ্যে একটি টিউবের খনন কাজ শেষ হয়েছে। অপরদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের কাজ প্রায় ৫৬ ভাগ শেষ হয়েছে।
যোগাযোগ অবকাঠামো দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে এবং এক্সটার্নাল ইকনোমি ক্রিয়েট করে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি শিল্প বিকাশে সহায়তা করে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে, হ্রাস করে দারিদ্র্য, বাড়ায় আর্থিক ক্ষমতা এবং জীবনমান।
উন্নয়ন তথা সামগ্রিক উন্নয়নকে প্রভাবিত করতে অপচয় রোধ এবং প্রকল্পের ওভারলেপিং রোধ করার পাশাপাশি মাল্টিমোডাল ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সেতুমন্ত্রী।
৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য অর্জনের পথকে কুসুমাস্তীর্ণ করুক এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের।
‘সরকার বিরাজনীতিকরণের পথে হাঁটছে এবং ষড়যন্ত্র করছে’ বিএনপি মহাসচিবের-এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরাজনীতিকরণতো নয়ই, বরং সরকার গণতন্ত্রের স্বার্থে আরও সক্ষম এবং শক্তিশালী বিরোধীদল চায়। বিএনপির জনবিরোধী ভূমিকা তাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়াছে, তাই তারা বিরাজনীতিকরণের কথা বলে। নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থায় বিএনপির সিনিয়র নেতারাই রাজনীতিতে এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতারাই বলে বেড়াচ্ছেন বিএনপি এখন একটি কোমর ভাঙ্গা রাজনৈতিক।
আওয়ামী লীগ কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে না, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বার বার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ দেশ, মাটি ও মানুষের পাশে থেকে এ দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই জনগণের আস্থা নিয়ে এগিয়ে চলছে সমৃদ্ধ আগামী নির্মাণে, সরকারের এ অগ্রযাত্রায় বিরোধী দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাদের বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি বিমুখ করা সরকারের কাজ নয়। সরকার বিএনপিকে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চায়। পেতে চায় গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় সহযোগী শক্তি হিসেবে। বিএনপি তাদের ভুল রাজনীতির খেসারত দিতে গিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর।
৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ওপর খাতভিত্তিক ভার্চুয়াল সভায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সিনিয়র সচিব সামসুল আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও সংযুক্ত ছিলেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারসহ যুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, দপ্তর প্রধানরা।