যদি কেউ এমন একটি প্রশ্ন করে তাহলে এর উত্তর কেমন হবে…??
নিশ্চয়ই যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের কাছে একরকম উত্তর আসবে আবার ওই দুই পদ বাদে সংখ্যা গরিষ্ঠ বিভিন্ন পদের নেতা বা তৃণমূল কর্মীদের জিজ্ঞাস করলে অন্যরকম উত্তর আসবে।
এর কারণ কি….?
নিশ্চয়ই বৈষম্য এর কারণ..!!
এখন প্রশ্ন হলো এই বৈষম্য কেন তৈরী হচ্ছে, কেন সংগঠনের মধ্যে সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়বদ্ধতার জায়গা এবং জবাবদিহিতার জায়গা তৈরী হচ্ছে না।
এই প্রশ্ন গুলো ঘুরপাক খায় মাথায়, অনেক প্রশ্ন ও জবাবও জমা, তবে কাকে দেবো বা করবো….!
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ নিয়ে বিভিন্ন থিওরি ঘুরপাক খায় মাথায়….!!
একবছর পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব বন্টন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় ওবায়দুল কাদের স্যারের স্পষ্ট ব্যাখ্যা যে পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত তারা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভারপ্রাপ্তদের ভার উত্তোলন করা হয় তাদের কাজের সুবিধার্থে, তারা যেন সংগঠনকে গতিশীল করতে পারেন। ওইদিন কোথাও স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়নি আগামী দুইবছরের জন্য তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। যারা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পান এবং ভারমুক্ত হয়েছেন মাননীয় নেত্রীর আশীর্বাদে, তারা তো নিজেদের গতিশীল করেছেন ভারপ্রাপ্ত থেকে ভারমুক্ত। কিন্তু যারা অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা বা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কেন্দ্রীয় বডির কলিগ, তাদের কি কোন পরিবর্তন হয়েছে এই সংগঠনে….?!
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোন কেন্দ্রীয় নেতাকে কোন ধরনের অফিসিয়াল চিঠি দেয়নি তার সাংগঠনিক পদের জন্য, এমন কি জাতির পিতার পবিত্র মাজার শরীফে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী বডি, সম্মেলনের প্রায় আড়াই বছর চললো কিন্তু একটা সাধারণ সভাও হয়নি ছাত্রলীগের..
দায়িত্ব বন্টন তো অনেক পরের কথা।
তবে যা যা হয়েছে তা হলো, ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তায় বহু বিভিন্ন পদধারী নেতারা স্বেচ্ছায় বিয়ে করে সংগঠন থেকে অব্যাহতি নিচ্ছে এমন কি অন্যান্য সংগঠনের দিকে ঝুকছে, যা ছাত্ররাজনীতিতে অশুভ সংকেত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ছাত্রলীগের প্রযুক্তি সম্পাদক দায়িত্বশীল পদে থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রযুক্তি সম্পাদক পদে চলে গিয়েছেন একজন।
৩৪জন অব্যহতি সহ স্বেচ্ছায় পদত্যাগী সহ প্রায় ৬০টি পদ শূন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির, যা আমাদের ভাবায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে। এছাড়া যোগ্যতা থাকা সত্বেও পদ বঞ্চিতদের একটা গ্রুপ আন্দোলন করে গেছে দিনের পর দিন, যা তাদের অনেকের পদ প্রাপ্যও ছিল সংগঠনে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ০৪ জানুয়ারি পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের পর করোনা পরিস্থিতি (মার্চের শেষ থেকে করোনা) আসতে আরও চার মাসের কাছাকাছি সময় পেয়েছিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কিন্তু নূন্যতম একটা সাধারণ সভা আয়োজন করতেও তারা পারেনি। কেন্দ্রীয় বডির যে কোন পোস্টেড নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কলিগ, যার যার অবস্থান থেকে সবাই দায়বদ্ধ, কেউ কারও কর্মী নয়। এখন প্রশ্ন হলো এই দীর্ঘ সময়ে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতার সাংগঠনিক কর্মহীনতায় দায়ী প্রায় ৬০টির মতো পদ শূন্য হওয়ার জন্য।
ছাত্রলীগের গত ২৯ তম সম্মেলনের পর প্রায় আড়াই বছরে অনেক অপারেশন হয়েছে এই ছাত্রলীগের ভেতর। এই সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো কেমন এই মুহুর্তে, সেটা প্রশ্নই রেখে গেলাম।
ভারপ্রাপ্ত থেকে ভারমুক্ত হওয়ার পরও যেহেতু ফলপ্রসূ কোন পরিবর্তন হয় নি এখনও, আবার আমাদের কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে আড়াই বছর হতে চললো তাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের #একমাত্র_অভিভাবক দেশরত্ন #শেখ_হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন, আপনার অভিভাবকত্বের স্নেহে লালিত ছাত্রলীগের কর্মীদের দিকে তাকিয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অবস্থা গুছিয়ে দিন। বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব, তাদেরকেই আবার দায়িত্ব দিন সম্মেলনের মাধ্যমে যেন তারা ফ্রেশ ভাবে নব উদ্যমে একঝাঁক তরুণ নেতৃত্ব নিয়ে সারা বাংলাদেশে মমতাময়ীর চলার পথ মসৃণ রেখে কাজ করে যেতে পারে মমতাময়ীর আদর্শ ভ্যানগার্ড হয়ে….
তাহলে ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ এই প্রশ্ন থাকবে না, যোগ্যরা পদায়ন হলে পদ বঞ্চিতদের হাহাকার থাকবে না, দ্রুত কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ করে সারা দেশে একঝাঁক আরেক ঝাক মুজিব সৈনিক বিকশিত হবে, যা অন্তত ছাত্রলীগের বর্তমান সাংগঠনিক পরিস্থিতির গ্লানিকে ভুলিয়ে দেবে…..
#কার্টেসিঃ
সোহান খান, সহ-সভাপতি,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।