রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় সারা দেশে কঠোর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ সদস্যরা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে গেলো ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। সেখানে পুলিশের গুলিতে চার ছাত্রের মৃত্যু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বিক্ষোভ মিছিলে নারকীয় তাণ্ডবে সেখানেও পুলিশ ও হেফাজতের সংঘর্ষে দুই দিনে ৫ জনের মৃত্যু হয়। হামলা ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৭ মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮ মার্চ হরতাল পালন করে ইসলামী সংগঠনটি। হরতালে দেশব্যাপী হামলা, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করে হেফাজতের নেতাকর্মীরা।

এসবের মাঝে গত ৩ এপ্রিল বিকেলে সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। সেখানে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল হক। তবে সেখানে থেকে হেফাজতের কর্মীরা মামুনুল হক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

গত ১৮ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিপুর ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হকের সমর্থকরা নোয়াগাঁওয়ে গ্রামে হামলা চালিয়ে ৬০-৭০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
সবশেষ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে নাশকতার হুকুমদাতা, বিস্ফোরণের হুকুমদাতা এবং নিরীহ মানুষকে হত্যাচেষ্টার হুকুমদাতা বলা হয়েছে। এছাড়া ‘দ্বিতীয় স্ত্রীকাণ্ডে’ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাওয়ে রয়েল রিসোর্টের ঘটনায়ও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়া মামুনুলের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নাশকতা অভিযোগে মামলা হয়।

অতীতের তাণ্ডবের অভিজ্ঞতা থেকেই ইতোমধ্যে চট্টগ্রামসহ হেফাজত অধ্যুষিত এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশের একাধিক সূত্র থেকে এই সতর্কতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জানা গেছে, এদিন সকালে সব এসপি ও রেঞ্জের ডিআইজিকে স্ব স্ব জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কেউ যাতে কোনোভাবেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, মানুষ ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সহিংস আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হামলা ঠেকাতে রাজধানীর ঢাকার কয়েকটি থানায় বাঙ্কার তৈরিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু জেলাতে ২৪ ঘণ্টা লাইট মেশিন গান তথা এলএমজি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের ডিউটি করতে দেখা গেছে।

Share.
Exit mobile version