দক্ষিণের মৃৎশিল্পীদের ভরসা দইয়ের ঘটি
★মাটি ও জ্বালানির খরচ বেড়ে গেছে।
★ পরিশ্রমের তুলনায় মাটির তৈরি তৈজপত্রের দাম কমে গেছে।
রফিকুল ইসলাম রনি, বরিশাল :- দক্ষিণঞ্চলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। মৃৎশিল্পকে ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পালপাড়ার কারিকরদের। দইয়ের ঘোটি তৈরির উপরই তাদের ভরসা। তাদের সুধু এ দই ঘোটির দ্বারাই এখন আয়রোজগার। জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকলের পালপাড়াসহ বরিশালের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মৃৎশিল্পীদের বাসস্থান। জেলায় প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার মৃৎশিল্পী মাটির তৈজপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
দক্ষিণের তৈরি মৃৎশিল্পের মনকাড়া পণ্যগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে জায়গা করে নিয়েছিলো। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই আজ এ শিল্প বিলুপ্তির পথে। একসময়ে বেশ কদর ছিল মাটির তৈরি জিনিসপত্রের। আধুনিক এসময়ে দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিক থেকে তৈরি জিনিসপত্রের সঙ্গে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের জীবনযাপন কষ্টসাধ্য। নুন আনতে পানতা ফুরায় তাদের। দক্ষিণের পালপাড়ায় মাটির হাঁড়ি-পাতিল এখন তেমন চোখে পড়ে না। কষ্টের মধ্যেই তারা স্বপ্ন দেখেন মৃৎশিল্প নিয়ে।
একসময়ে পালপাড়াগুলোতে তৈরি করা হতো মাটির হাঁড়ি, পাতিল, ঢাকনা, কাসা, পেয়ালা, মাইসা, সাতখোলা, ব্যাংক, কলস, ডাবর, পানি রাখার পাত্রসহ বিভিন্ন উপকরণ। এসব উপকরণের তেমন কদর না থাকলেও বর্তমানে দইয়ের ঘোটির চাহিদা রয়েছে।
গৌরনদীর সরিকল পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা বলেন, বর্তমান সময়ের আধুনিক বিভিন্ন তৈজপত্রের কারনে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমেছে। তাই আমরা অর্থনৈতিক ভাবে সমস্যায় আছি। এখন দইয়ের হাড়ি তৈরি করণের উপরই আমাদের ভরসা।
সরিকলের পালপাড়ার প্রবিণ মৃৎশিল্পী শান্তি রঞ্জন পাল বলেন, আগে মাটি কিনতে হতো না। এখন মাটি কিনে কাজ করতে হয়। মাটি থেকে তৈরি অন্য জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের কারনে। দইয়ের ঘোটির কোনো বিকল্প করতে না পারায় অর্থনৈতিক সমস্যা কিছুটা সমাধানে এখন এটাই আমাদের ভরসা।