রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাই (এলএসডি) মাদকসহ গ্রেপ্তার পাঁচজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন সিরাজুস সালেকীন ওরফে তপু, এসএম মনওয়ার আকিব ওরফে আনান, নাজমুস সাকিব, সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফ এবং নাজমুল ইসলাম।
এরআগে খিলগাঁও থানার এ মামলায় পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক বদরুল আল আমিন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অনলাইন ও অফলাইনে যোগাযোগ করে সম্প্রতি আবিষ্কৃত এলএসডি মিশ্রিত প্রিন্টের ব্লট পেপার ও অবৈধ নেশাজাতীয় মিথাইল অ্যাম্ফাটামিনযুক্ত মাদকদ্রব্য কথিত আইস এবং গাঁজা মাদক বেচাকেনা করে আসছেন। আসামিরা তাদের পলাতক অন্য অজ্ঞাতনামা মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় বিভিন্ন উপায়ে দেশের বাইরে থেকে অবৈধ মাদকদ্রক্য এলএসডি মিশ্রিত ব্লট পেপার, অবৈধ নেশাজাতীয় মিথাইল অ্যাম্ফাটামিনযুক্ত মাদকদ্রব্য কথিত আইস এবং গাঁজা সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন।
প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামিরা সংঘবদ্ধ মাদক বিক্রেতা ও সরবরাহকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তারা অভিনব কৌশলে দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক দ্রব্য সংগ্রহ করে কৌশলে ঢাকায় এনে শহরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল বলে জানা যায়। তারা মাদক সরবরাহ করে দেশের যুবসমাজ বিশেষ করে ছাত্র সমাজকে ধ্বংসের পথে ধাবিত করছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা মামলার ঘটনার দায় স্বীকার করলেও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সুকৌশলে এড়িয়ে যান। সময় স্বল্পতার কারণে তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেননি। তাই আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারসহ মাদক চক্রের মুল হোতাদের গ্রেপ্তারসহ আরও মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
আসামিদের পক্ষে আইনজীবী মো. আবুল হোসেন, কামরুল আহমেদ কামাল প্রমুখ আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তারা বলেন, তাদের গত ২৯ মে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তা জানার বা উদ্ধার হওয়ার দরকার তা হয়েছে। আসামিরা ছাত্র, তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপরই প্রযুক্তির সহযোগিতায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এলএসডি সেবনের পর হাফিজুর অস্বস্তিতে ভুগতে থাকেন। একপর্যায়ে টিকতে না পেরে তিনি নিজেই একটি শর্ট পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চলে যান। তবে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই এক ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে ধারাল অস্ত্র নিয়ে গলায় আঘাত করেন এ কারণেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই তিন শিক্ষার্থীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৯ মে রাতে খিলগাঁও থেকে অবৈধ ভয়ংকর মাদক এলএসডি বিক্রির সময় মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফ, এস এম মনওয়ার আকিব ওরফে আনান, মো. নাজমুস সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনজনের শরীর তল্লাশি করে এলএসডি ও আইস উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে ভাটারা থানাধীন বারিধারা চৌধুরী লাউঞ্জে অভিযান চালিয়ে নাজমুল ইসলাম ও বিএম সিরাজুস সালেকিন তপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বনানী থানার মহাখালী টিভি গেট এলাকায় কানিজ ফতেমা বিবির বাড়ির তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ এলএসডি উদ্ধার করা হয়।
এঘটনায় খিলগাঁও থানার এসআই এসএম মানসুরুল করিম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটি দায়ের করেন।