রফিকুল ইসলাম রনি, বরিশাল :- বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশালের বাবুগঞ্জে সন্ধ্যার পাড় এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর জন্মভূমি রহিমগঞ্জ সহ এ তিনটি গ্রাম। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও খর¯্রােতা হওয়ায় বিগত কয়েক দিনে এ তিনটি গ্রামের নদী পাড় এলাকার বেশ কিছু অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এবছর ভাঙ্গনের যে ভয়াবহতা দেখা যাচ্ছে, আগে থেকে প্রয়োজনীয়তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভাঙ্গারমুখ এলাকা ও রহিমগঞ্জ এবং রমজানকাঠী এ তিনটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

সরজমিনে উক্ত ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউপির ভাঙ্গারমুখ, রহিমগঞ্জ এবং রমজানকাঠী গ্রামের নদী পারের এলাকার বাড়ি-ঘর এবং ফসলি জমি এমনিতেই বর্ষা মৌসুম শুরু থেকেই তীব্র নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে রয়েছে। এ তিনটি গ্রামের নদীর পার এলাকায় বিশাল পাড়ালের সৃষ্টি হয়ে ভয়াবহ অবস্থায় আছে। ফলে গ্রামবাসীরা অনেকই অতংকের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়াও এবার বর্ষা শুরু হবার আগেই ভাঙ্গতে শুরু করেছে নদী সন্ধ্যা। বর্ষায় নদীতে পানি বাড়ায় ব্যাপক আকারে নদী ভাঙ্গনের সম্ভাবনা প্রতিনিয়ত রয়েছে। যা শত চেষ্টা করেও ভাঙ্গন রোধ কর কঠিন হয়ে পড়বে। তাই ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে , এ বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও নদীতে আগের তুলনায় এ মাসে ¯্রােত বেশি থাকায় এসব গ্রামে প্রতিবছর ন্যায় এবছরও এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় অনেকেই ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছেন। এ তিনটি গ্রামের অনেকের বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ও হওয়ার পথে রয়েছে।

হুমকির সন্মুখিন হয়ে পড়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর নামে প্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ এবং স্মৃতি ও যাদুঘর। সবুজ বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সবুজ বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার নদীর পার এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবছরই সীমিত আকারে ভাঙ্গে। কিšুÍ ভাঙ্গনরোধে এগিয়ে আসে না কোন জনপ্রতিনিধি। কয়েক বছর থেকে এ তিনটি গ্রামের নদী ভাঙ্গন সর্বকালের ভয়াবহন রূপ ধারন করেছে।
ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আরো পানি বৃদ্ধির সময় এ তিনটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। নদী ভাঙ্গনের কারণে এ এলাকার লোকজন এখন আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন। সুশিল সমাজ মনে করেন নদীর পাড় এলাকা দিয়ে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ এবং নদী শাসন করলে হয়তো নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে পূর্ব পুরুষের ভিটাবাড়ি, জায়গা জমি সব নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ভাঙ্গারমুখ ঘাট সংলগ্ন চরউত্তর ভূতেরদিয়া, রহিমগঞ্জ বাজার, রমজানকাঠী এলাকা হতে শিকারপুর ঘাট পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরী ভিত্তিতে বেড়ীবাঁধ নির্মান ও নদী শাসনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

চরউত্তরভূতের দিয়া এলাকার মোঃ জহিরুল ইসলাম সুমন বলেন, সন্ধ্যার তীব্রো ¯্রােতের কারনে নদীর পাড় এলাকা প্রতিনিয়ত ভাঙ্গছে। আমাদের ফসলি জমিসহ এলাকার অসহায় কৃষকদের ফসলি জমি বিলিন হয়ে গেছে নদীর গর্ভে। ভাঙ্গন রোধে যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে অচিরেই চরউত্তর ভূতেরদিয়া এলাকার চিহ্ন থাকবেনা।

রহিমগঞ্জ এলাকার মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন,ভাঙ্গনে দিশেহারা নদীর পাড়ের বসবাসরত সাধারন মানুষ। তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ না করলে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর জন্মভূমি রহিমগঞ্জের চিহ্ন অচিরেই থাকবে না। গ্রামতিনটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বরিশাল-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু ভাইয়ের কাছে আমাদের আকুল আবেদন অতি দ্রæত এই ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

স্থানীয়রা বলেন, ছোট আকারে অনেক ভাঙ্গন দেখেছি। কিন্তুু এবার যে ভাঙ্গনে ধরেছে ভয়ংকর ভাঙ্গন এখন আমরা হতাশায় পড়ে গেছি। আবাদি জমি ও গাছ পালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিগত ৫০বছরেও এরকম নদী ভাঙ্গন আমরা দেখিনি।

জাহাঙ্গীর নগর ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এইচ এম অহিদুজ্জামান মিরন জানান, এই নদীটা ছিল অনেক দুরে। আস্তে আস্তে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে রহিমগঞ্জ নতুন বাজার পর্যন্ত এসেছে। এবছ অতিরিক্ত ভাঙ্গছে।

রমজান কাঠী এলাকার নদীর পাড় এলাকার লোকজন বলেন, কয়েক বছর ধরে কিছু কিছু করে নদী ভাঙ্গে। এছর অনেক ভাঙ্গছে। এভাবে নদী ভাঙ্গতে থাকলে আমাদের থাকাতো অনেক অসুবিধা হয়ে পড়বে।

Share.
Exit mobile version