বিশেষ প্রতিনিধি।। চলতি শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের ছাপার মান নিয়ে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চলছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। এ নিয়ে মাঠপর্যায়ে তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
জানা গেছে, এ বছর পাঠ্যবই বিতরণের শেষ পর্যায়ে একটি চক্র নিম্নমানের কাগজ দিয়ে প্রাথমিকের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কিছু বই ছাপায়। সেগুলো বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) মান যাচাইয়ের জন্য প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নামে জমাও দেয় তারা।
পাঠ্যবই ছাপার কাজ পাওয়া মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মান যাচাই করে বই ছাড়ের ব্যবস্থা নিয়েছে এনসিটিবি। বই বিতরণ শেষ হওয়ার পর এখন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিছু বই নিম্নমানের কাগজে ছেপে গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে রিপোর্ট করিয়ে অপপ্রচার করালেই তা সত্য হয়ে যায় না। একটি সিন্ডিকেট দরপত্র জমা দিয়ে কাজ পায়নি। তারা এখন ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী সাব্বির খান বলেন, তিন স্তরের পরিদর্শনের পর পাঠ্যবই ছাড় হয়েছে। কোনো ছাপাখানার পক্ষে নিম্নমানের বই দেওয়ার সুযোগই ছিল না। নিম্নমানের ছাপা হয়েছে এমনটা প্রমাণের চেষ্টা করছে কাজ না পাওয়া প্রতিষ্ঠাগুলো। মূলত সিন্ডিকেট করেও কাজ না পেয়ে ক্ষুব্ধ মুদ্রণ শিল্প সমিতির কোনো কোনো নেতা।
এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন উপজেলা থেকে বই সংগ্রহ করে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে জমা দিয়ে রিপোর্ট নিয়েছি। এখনো আমাদের কাছে ১০০ কপি আছে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করব।
পাঠ্যবইয়ের মান নিয়ে এভাবে পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, তিন স্তরে পরিদর্শন করে বই জেলা-উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। এর পরও আমরা ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে মাঠপর্যায় থেকে বই সংগ্রহ করে মান যাচাই করা হবে। মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ২০ শতাংশ অর্থ এই পরিদর্শনের পর ছাড় করা হয়। যদি সেই পরিদর্শনে কোনো বই নিম্নমানের পাওয়া যায়, তা হলে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বছর করোনা মহামারীর কারণে গত ১ জানুয়ারি সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব হয়নি। তবে ওই দিন থেকেই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিতরণ হয়। এবার ৪ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিতরণ করা হয় ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি বই। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে ভার্চুয়ালি দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।