বিশেষ প্রতিনিধি।। মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিজ বাড়ির একটি ঘর থেকে এক নারী ও তাঁর দুই মেয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, ওই নারীর স্বামী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। গতকাল রবিবার ভোরে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি পাশের সড়কে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
ঘিওরে নিহতরা হলেন আঙ্গারপাড়া গ্রামের আসাদুর রহমান রুবেলের (৪০) স্ত্রী লাভলী আক্তার (৩৫), বড় মেয়ে উপজেলার বানিয়াজুড়ি সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছোঁয়া আক্তার (১৬) ও ছোট মেয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কথা আক্তার (১২)। অভিযুক্ত রুবেল একই গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে ও গ্রাম্য দন্ত চিকিৎসক।
স্থানীয় লোকজন জানায়, রুবেল ও লাভলী ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাঁরা সুখে সংসার করছিলেন। ১৫ বছর ধরে রুবেল আঙ্গারপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বাস করছিলেন। বেশ কিছুদিন আগে তিনি মুরগির খামার দিয়ে লোকসানে পড়েন এবং ভুল চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাঁকে বড় জরিমানা গুনতে হয়। তাঁর ঋণ বেড়ে যায়। পাওনাদাররা প্রায়ই বাড়িতে এসে টাকা পরিশোধের জন্য তাগাদা দিতেন। বিষয়টি নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই তাঁর ঝগড়া হতো। গতকাল হত্যাকাণ্ডের পরে রুবেল পাশের পাচুরিয়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে আত্মহত্যার জন্য শুয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশে দেয়।
ঘিওর থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন বিপ্লব বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল বলেছেন, তাঁর ঋণের বোঝা বাড়ছিল। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ হতো। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। শনিবার দিবাগত রাতের শেষ ভাগে তিনি ঘুমন্ত স্ত্রী ও দুই মেয়েকে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলেন। এরপর প্রথমে স্ত্রী, পরে বড় মেয়ে ও ছোট মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন।
ওসি জানান, এ ঘটনায় রুবেলের শ্বশুর শাজাহান উদ্দিন থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনায় আরো কোনো বিষয় ও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।