রাঙা প্রভাত ডেস্ক।। উদ্বোধনের পর দেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প পদ্মা সেতু (রোববার) সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন।
যানবাহন চলাচলের বিষয়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) জানিয়েছে, রোববার থেকে তারা পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৩টি রুটে বাস পরিচালনা করবে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে ৬৫ বাস পরিচালনা করব। এর অধিকাংশই এসি বাস। বর্তমানে শুধু খুলনা ও যশোর রুটে বিআরটিসি বাস চলবে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহন কোম্পানির এসি ও নন এসি বাসও রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করবে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু ব্যবহারের জন্য এরইমধ্যে টোল ঘোষণা করেছে সরকার। গত ১৭ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সেতু বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু পার হতে একটি মোটরসাইকেল ১০০ টাকা, একটি গাড়ি ও একটি জিপ ৭৫০ টাকা। টোল চার্ট অনুযায়ী, একটি পিকআপের জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা, একটি মাইক্রোবাসের জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা, একটি ছোট বাসের জন্য (৩১-সিটে) ১ হাজার ৪০০ টাকা, একটি মাঝারি আকারের বাসের (৩২ আসনের বেশি) জন্য ২ হাজার টাকা এবং একটি বড় বাসের (তিন-এক্সেল) জন্য ২ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ছোট ট্রাকের (৫ টন পর্যন্ত) জন্য ১ হাজার ৬০০ টাকা, একটি মাঝারি ট্রাকের (৫-৮ টন) জন্য ২ হাজার ১০০ টাকা এবং ৮-১১ টন ওজনের একটি ট্রাকের জন্য ২ হাজার ৮০০ টাকা, একটি ট্রাকের (থ্রি-এক্সেল) জন্য ৫ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং একটি ট্রেলারের (চার-এক্সেল) জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয় যে চার-এক্সেল ট্রেলারের উপরে প্রতিটি এক্সেলের জন্য ৬ হাজার টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা যোগ করা হবে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনে আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশে বক্তব্য শেষে তিনি স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন। পরে দুপুরে মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ শেষে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে সেতু উদ্বোধন শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর মাঝামাঝিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রদর্শিত সেতুর ভার্চুয়াল রংধনু আকারের ফ্লাইং ডিসপ্লে উপভোগ করেন। সেতু পার হয়ে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছে তিনি সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। পরে তিনি কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেন এবং ভাষণ দেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলল।