রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ সংবাদ প্রকাশ কে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া কক্সবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিককে ‘আপত্তিকর’ ভাষায় গালাগালি করার ঘটনায় টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরুকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ওই কর্মকর্তাকে ‘ওএসডি’করার পাশাপাশি আদালত তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে বললেও সেটাও প্রতিপালন করা হবে।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদের সভা শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
দেশে যে প্রায় পাঁচশ উপজেলা আছে এবং প্রত্যেক উপজেলায় যে একজন করে ইউএনও আছেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “প্রায় পাঁচশ জন লোকের মধ্যে সবাই ভালো হবে এটা কীভাবে আপনারা আশা করেন।
“আমাদের এরই মধ্যে নির্দেশনা রয়েছে, তাকে ওএসডি করে নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে আদালত কী নির্দেশনা দেয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।”
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমরা বলেছি তাকে জরুরি ভিত্তিতে ওএসডি করে নিয়ে আসো। তারপর হাই কোর্ট থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটা…।”
রোববার বিভাগীয় কমিশনারদের সম্মেলনেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, “খুব জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যে সমস্ত জেলায় যাবেন, সেখানকার সব কর্মকর্তাদের সাথে বসে তাদের আচার ব্যবহার কেমন হবে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক দিক নির্দেশনা দেবেন।”
উল্লেখ্য টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদী সংলগ্ন ওয়াব্রাং এলাকায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের উপহার হিসেবে দেওয়া ২৭টি ঘরে জোয়ার-ভাটা ও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েন উপকারভোগীরা।
তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২১ মিনিটে ঢাকা পোস্ট নামের একটি ওয়েব পোর্টালের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ফরহাদ। ‘নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করেন।
এর জেরে সেদিন রাত সাড়ে ১০টায় টেকনাফের ইউএনও তার সরকারি ফোন নম্বর থেকে সাইদুলকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। পরে ওই কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে শুক্রবার সমাধানের জন্য দুপক্ষকে ডাকা হয়। সেখানে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান ইউএনও।
এরপর পুরো বিষয়টি হাই কোর্টের নজরে আনেন একজন আইনজীবী। এরপর ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরুর বিরুদ্ধে কী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে রোববার আদেশ দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
ইউএনওর গালাগালির প্রসঙ্গ ধরে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার শুনানিতে বলেন, “কোনো রং হেডেড পারসন ছাড়া এমনভাবে বলতে পারে না।”