রাঙা প্রভাত ডেস্ক।।

চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। এ কারণে সোমবার ১ আগস্ট থেকে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ছয় টাকা বাড়িয়েছে সরকার। ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য কেজিপ্রতি ১৪ থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষকদের অভিযোগ, অসময়ের বন্যা, খরা আর অনাবৃষ্টিসহ নানা কারণে ব্যহত হচ্ছে আমন ধানের রোপণ। সঙ্গে ভরা বর্ষায় প্রকৃতির বিরূপ আচরণে এবার অনাবৃষ্টিতে তাদের বেশির ভাগই হয়ে উঠেছে সেচনির্ভর। এতে করে বাড়তি খরচের ধকল সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সঙ্গে শ্রমিকের দিনমজুরি বৃদ্ধি, আবার কখনো শ্রমিক সংকটও ভোগাচ্ছে তাদের। এখন সারের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করার কথা থাকলেও মানছে না ব্যবসায়ীরা।

সারের ৫০ কেজির বস্তার সরকার নির্ধারিত মূল্য ইউরিয়া ৮০০ টাকা, টিএসপি ৭৫০ টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকা, এমওপি ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করার কথা থাকলেও মানছে না ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে প্রতিবস্তায় দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও ডিলাররা বলছেন, এখন সারের কোনো সংকট নেই।

এদিকে কৃষি বিভাগ বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। এতে ছয় টাকা দাম বাড়ানোর পরও সরকারকে প্রতি কেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি ছিল মাত্র ১৫ টাকা। সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারের দাম চার দফা কমিয়ে অত্যন্ত স্বল্প দামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে।

ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সে জন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের দাম প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো ৮ লাখ টন, বর্তমানে ১৬ লাখ টন ব্যবহার হচ্ছে। ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ার ফলে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি, বরং বেড়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

 

Share.
Exit mobile version