রাঙা প্রভাত ডেস্ক।।

গত এপ্রিলে চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার কেনার চুক্তি করেছিলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। পরে জুনের শেষ দিকে তিনি সেই চুক্তি বাতিল করেন। চুক্তি থেকে সরে আসায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ।

টুইটারের সঙ্গে হওয়া সেই চুক্তি থেকে আইনিভাবে সরে আসতে আদালতের দারস্থ হয়েছেন মাস্ক। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আদালতে আইনি লড়াইয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে যুক্তি খণ্ডন করেন ইলন মাস্ক এবং টুইটার কর্তৃপক্ষ।

টুইটারের দায়ের করা মামলার পর চুক্তি বাতিলের পেছনে কারণ হিসেবে ইলন মাস্ক বলেন, টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেশি এবং এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি দিয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অন্যদিকে টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি, ৪৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার পর ইলন মাস্কের মন পরিবর্তন হয়ে গেছে। এ কারণে চুক্তি থেকে সরে আসার জন্য ইলন মাস্ক অজুহাত তৈরি করছেন।

আদালতে টুইটারের অ্যাটর্নি ব্র্যাড উইলসন বিচারককে বলেন, যেসব ডাটা সাইন্টিস্টদের মাধ্যমে ইলন মাস্ক ভুয়া অ্যাকাউন্টের হিসাব রেখেছিলেন, তাদের কাছ থেকে নথিপত্র পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। পরে দেখা যায়, টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫%-এর বেশি না, যা ইলন মাস্কের অভিযোগকে সমর্থন করে না। এ কারণে টুইটার কর্তৃপক্ষ বিলম্ব এবং অস্পষ্টতার প্যাটার্নের সম্মুখীন হয়েছে।

পক্ষান্তরে, ইলন মাস্কের অ্যাটর্নিরা আদালতের কাছে অনুরোধ করেন যেন দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী আর প্রতিদিন টুইটারে তাদের ব্যয় করা সময় নিয়ে যেন টুইটার কর্তৃপক্ষ আরও তথ্য উপস্থাপন করে।

নথি সরবরাহ কিংবা মামলার শুনানিতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক প্রধান জ্যাক ডরসি।

আগামী ১৭ অক্টোবর ডেলাওয়্যার রাজ্যের কোর্ট অফ চ্যান্সারিতে ৫ দিনের বিচারকাজ শুরু হওয়ার আগে ইলন মাস্কের জবানবন্দি আইন অফিসে ব্যক্তিগতভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

এ বছরের এপ্রিলে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কেনার চুক্তি করেন টেসলা ও স্পেস এক্সের প্রতিষ্ঠাতা সিইও ইলন মাস্ক।

চুক্তির ঘোষণা দিয়ে মাস্ক এক বার্তায় বলেছিলেন, “গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে বাক স্বাধীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। টুইটার হচ্ছে ডিজিটাল নগর স্কয়ার যেখানে মানবতার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হবে। আমি টুইটারকে আরও গতিশীল করতে চাই। নতুন ফিচারসের পাশাপাশি এর অ্যালগোরিদম ওপেন সোর্সে দিতে চাই। এটি আস্থা বাড়াবে, ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ করবে।”

তবে গত জুলাইয়ে টুইটার কেনার চুক্তি থেকে সরে আসেন মাস্ক। ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে টুইটারের বিভ্রান্তিমূলক বিবৃতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি কেনার চুক্তি বাতিল করেন তিনি। পরে এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

সে সময় ইলন মাস্কের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, টুইটারের কাছে একাধিকবার ভুয়া বা স্প্যাম অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ তথ্য দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এ স্বচ্ছতাই একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মূল দিক।

Share.
Exit mobile version