বিশেষ প্রতিনিধি।।  পাবনায় আগাম জাতের মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু মন ভালো নেই চাষিদের। তাদের অভিযোগ, বাজার দরে ভারসাম্যহীনতায় মিলছে না ন্যায্যমূল্য। লোকসান ঠেকাতে কৃষকপর্যায়ে সুনির্দিষ্ট বাজার মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। আর বাজারে একসাথে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কম পাচ্ছেন চাষিরা।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। বিঘাপ্রতি ফলন ৫০ থেকে ৫৫ মণ ছাড়িয়েছে। মৌসুমের প্রথম দিকে চাষিরা প্রতি মণ পেঁয়াজে এক হাজার ৩০০ টাকা দাম পেলেও এখন হাটবাজারে সরবরাহ বাড়ায় হঠাৎই কমে গেছে দাম। যে কারণে ভালো ফলনেও চাষিরা পড়েছেন লোকসানের দুশ্চিন্তায়।

পেঁয়াজ উৎপাদনে খ্যাত পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আফড়া, পুন্ডুরিয়া, মনমথপুর, ধুলাউড়িসহ কয়েকটি এলাকার মাঠে দেখা যায়, কুয়াশা ঢাকা শীতের ভোরে মাঠ থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আগাম জাতের এই পেঁয়াজ আবাদে কিছুটা লোকসানে পড়েছেন তারা। সেই সাথে বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছেন উত্তরের পেঁয়াজ চাষিরা। আলাপকালে আফড়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আব্দুল কাদের ও মফিজ উদ্দিন বলেন, বিঘাপ্রতি যে পরিমাণ খরচ তাতে এক হাজার টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে। বীজ, সার, শ্রমিক, কীটনাশকের যে দাম তাতে বর্তমান বাজার মূল্যে লোকসানই হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি মণ নতুন পেঁয়াজ ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধুলাউড়ি গ্রামের কৃষক আবু বক্কার, ওয়াহিদ ও শাজাহান আলী বলেন, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগাতে সব মিলিয়ে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেই এক বিঘা জমির পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। উৎপাদন খরচই তো উঠছে না। এ রকম হলে আগামীতে পেঁয়াজ আবাদ বাদ দিতে হবে। লোকসান ঠেকাতে আপাতত বিদেশী পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা।

গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় বেড়া সিঅ্যান্ডবি চতুরবাজার পেঁয়াজ হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম হাট। চাষিদের পাশাপাশি কথা হয় কয়েকজন পাইকারদের সাথে। তারা বলেন, সকালে এক হাজার ২০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ কেনার পর ঢাকার ব্যাপারীরা সেই পেঁয়াজের দাম বলছেন এক হাজার টাকা। হাটে পেঁয়াজ আসছে বেশি। এভাবে অনেকটা লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।

Share.
Exit mobile version