সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলের কৃষক ও খেটে খাওয়া দিনমজুরেরা। এ অবস্থায় ঠান্ডায় ঠিকমত মাঠে কাজ করতে পারছেন না। এতে ব্যাহত হচ্ছে এখানকার জীবনযাপন। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও ঠান্ডায় ভুগছে।
কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
রাস্তায় মানুষের চলাচল একবারেই সীমিত। নিতান্তই প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষের দেখা মিলছে পথে-ঘাটে। ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটেখাওয়া মানুষজন। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। হাড় কাঁপানো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে।
ডিসেম্বরের শুরুতে শীতের তীব্রতা শুরু হলেও মাসের শেষ থেকে অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে অব্যাহত শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সূর্য পশ্চিমদিকে হেলে পড়লেই বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পুরো জেলা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকালের পর থেকে আবারও বাড়ছে শীত। ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।
তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে এই জেলার ওপর দিয়ে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে।
লালমনিরহাট -বুড়িমারী মহা সড়কের ট্রাক চালক শাকিল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে ঘনকুয়ায়াশ ঢাকা পড়ছে সড়ক-মহাসড়ক ২০ ফিট দূরত্বের মধ্যে বোঝা যায় না সামনে থেকে গাড়ি আসছে কি না। এজন্য ফুল হেড লাইট জ্বালিয়ে ধিরে ধিরে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। না হলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ইট ভাটার শ্রমিক রাশেদ ইসলাম বলেন, দুই দিন ধরি ভাটায় যাইনি। পানির মতো শীত পড়ছে, আর ঘন কুয়াশা বাতাসের কারণে বাসায় বসে আছি। কাজে গেলে ঠান্ডায় হাত-পা কোকড়া নাগি যাছে।
অটো চালক শাহিদুল বলেন, ঘনকুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না। সকাল সাতটা পার হয়ে গেল এখনও একটা ভাড়া পাইনি। আগে দিনে সাত থেকে আটশ টাকা আয় হতো অটো চালিয়ে। এখন চার থেকে পাঁচশ টাকা আয় হয় না। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে।
একদিকে আয় কম অন্যদিকে বাজারের সব জিনিসের দাম বেশি। এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ দ্বিগুণ বেড়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। আরও চাহিদা দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ আসলে বিতরণ করা হবে।