বিশেষ প্রতিনিধি ।। পশ্চিমবন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে বাঘ গণনার জন্য স্থাপিত ৮টি ক্যামেরা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যামরা চুরির ঘটনার পর সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে জেলেদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, সুন্দরবনে বাঘ শুমারি (গণনা) ২০২৩ শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি মাস হতে এই কার্যক্রম চলমান আছে। বাঘ গণনার জন্য সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিং গ্রুপ সুন্দরবনের বিভিন্ন অঞ্চলে গাছে গাছে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলমান আছে।
বনবিভাগ পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী ষ্টেশন অফিসার (এসও) নূর আলম জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জে ইতিমধ্যে ৩৭৬টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সুন্দরবনে নোটাবেঁকী অভায়ারন্য অঞ্চলে স্থাপিত ৮টি ক্যামেরা চুরি হয়ে গেছে। তবে কবে চুরি হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
এদিকে সুন্দরবনে বাঘ গণনার জন্য স্থাপিত ক্যামেরা চুরির ঘটনায় অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের দুটি স্টেশন হতে জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় দিন হতে কৈখালী ও কদমতলা স্টেশন হতে জেলেদের অনুকূলে পাশ (অনুমতিপত্র) প্রদান স্থগিত করা হয়।
বনবিভাগ সূত্রের দাবি, বাঘ গণনার জন্য ক্যামেরা ট্রাকিং পদ্ধতি স্থাপনের স্বার্থে জেলেদের বনে প্রবেশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সুন্দরবনে বাঘ গণনার জন্য স্থাপিত কয়েকটি ক্যামেরা সম্প্রতি চুরির ঘটনা বিস্ময়ের। কারা এই ক্যামেরা চুরি করেছে তা এখনো যানা যায়নি। তবে ঘটনাটি উদঘাটনের চেষ্টা অব্যহত আছে।
তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনের মধ্যে কোবাদক ও বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন দিয়ে যথারীতি জেলেদের সুন্দরবনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হতেই অপর দু’টি স্টেশন উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান বনবিভাগের এ কর্মকর্তা।
অপরদিকে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরা রেঞ্জের ছোট কেয়াখালী ও পুষ্পকাটি এলাকা হতে তিনটি নৌকাসহ তিন জেলেকে আটক করে বনবিভাগ। মাছ শিকারের অনুমতি নিয়ে অভয়ারণ্য এলাকায় যেয়ে মাছ শিকারের সময় মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করা হয়। আটকককৃতরা হলো শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালী গ্রামের আব্দুল হক, আলাউদ্দীন ও সালাউদ্দীন নামের দুই সহোদর। এ সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় মাছ শিকারের বড়শি, কিছু সুন্দরী গাছের কঁচাসহ তিনটি নৌকা উদ্ধার করে অভিযানে থাকা বনকর্মীরা। আটক জেলেদের মধ্যে দু’জনকে কারাগারে পাঠানো হলেও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সালাউদ্দীনকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।