খন্দকার রাজু আহম্মেদ

গত ৮/১০ বছর বরিশালের রাজনীতি বেশ শান্ত ও স্বস্তির ছিলো। বরিশাল আওয়ামী লীগের অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এ শান্তি ও ঐক্যের প্রতিক। বরিশালের ১০ টি উপজেলায় আওয়ামী লীগে কোন হানাহানি/ যুদ্ধাংদেহী মনোভাব নেই, তবে হাইব্রিড ও পরগাছার দৌরাত্ম কিছুটা বেড়েছে।

সদ্য বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদল হওয়ায় হঠাৎ দামামা বাজানোর ইঙ্গিত মিলছে। এই দামামা কোন আদর্শিক কিংবা রাজনৈতিক নয়, এটা সম্পূর্ণ হালুয়া-রুটির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এটা নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পরিবর্তন হতে না হতেই বরিশালের বাস-ট্রাক টার্মিনাল ও বাজার-ঘাট দখল / বেদখলের সংবাদ পাওয়া গেছে। বরিশালে রাজনীতির নামে এই দখল- বেদখলের খেলাই চলে; এদের প্রতিপক্ষ যে বিএনপি-জামায়াত নয় তাও নিশ্চিত।

মরহুম হিরণ সাহেবের সময় কাশিপুরের আফতাব চেয়ারম্যানকে কিভাবে উচ্ছেদ করে, ভয় দেখিয়ে, প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে, বিতারিত করে আবার গোত্রভুক্ত করে, তা যেমন দেখেছি তেমনি বিএম কলেজে অছাত্রদের দিয়ে কর্মপরিষদের নামে ছাত্র রাজনীতির বারটা বাজানো এবং অধ্যক্ষকে পেটাতে ও কলেজে যোগদান না করতে দিতেও দেখেছি। দেখেছি বরিশাল মহানগরে জসিম- অসীম ভাইদের কমিটি অকার্যকর করে পূর্নাঙ্গ কমিটি কিংবা বরিশাল মহানগরের কোন কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি করতে না দিতে। আরও দেখলাম বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসিম দেওয়ানকে বিএনপি নেতার মামলায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখাতে এবং বর্তমান আহবায়ক রইজ আহাম্মেদ মান্নাকে সাজানো মামলায় গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়ে ছবি ভাইরাল করতে!
আপনি চোখ খুললেই এসবের পিছনে আদর্শহীন-নির্বোধ-আত্নঘাতি-ব্যক্তিস্বার্থ কেন্দ্রীক অপরাজনীতি ছারা ভিন্ন কিছু দেখবেন না।
অথছ বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অর্জনের সাথে আপনি গোপালগঞ্জের চেয়েও অভূতপূর্ব সাফল্য দেখতে পাবেন। বরিশালের ১০ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ৬ মেয়র আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগ সবার নেতা এক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ মহোদয়।

সংগত কারনেই প্রশ্ন আসে তাহলে সমস্যা কোথায়? হ্যা এরপরও মূল সমস্যা হলো গোড়ায় গন্ডগোল মানে আদর্শীক না হয়ে সম্পর্কটা স্বার্থের, ফলে সামান্য বাতাসে মাস্তুল উড়ে যায়।
আমি বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজের ছাত্র থাকাকালীন মরহুম শওকত হোসেন হিরণ সাহেবের সময় কিছু চ্যালাপ্যালার বাড়াবাড়ি যেমন দেখেছি তেমনি তার মৃত্যুর পর আবার অন্যদের তেমনটাই দেখেছি। আরও দেখেছি ২০২১ এর জুন মাসে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী সরকারী লীগের এক বড় কাউয়ার সাথে আমার এলাকা জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নে বরিশাল থেকে এসে ছাত্রলীগের নেতাদের বিএনপি’র পদধারী প্রার্থীর পক্ষে মাস্তানী করতে!
আমার বাবুগঞ্জ উপজেলায় গত দেড়যুগ, বিএম কলেজ-হাতেম আলী কলেজ-সরকারী বরিশাল কলেজ- বরিশাল ল কলেজে দেড় যুগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাবদী ছাত্রলীগের কমিটি/কার্যক্রম নেই; এর দায়ভার কাদের?

তাই বলছি মহাশয়গন আদর্শহীন পদলেহনকারী এবং হাইব্রিড -কাউয়া না পুষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শেখ হাসিনার কর্মী তৈরি ও পৃষপোষকতা করুন। বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ মহোদয়ের তিল তিল করে গড়ে তোলা সংগঠন; অরাজনৈতিক লোকদের হাতে ধ্বংস হতে পারে না। সংগঠন গরুন, নিয়মিত যুবলীগ- ছাত্রলীগ -স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি করান, নেতারা যখন রাজনীতি চর্চা করবে তখন পদলেহনকারী কিংবা হাইব্রিড কাউয়াদের ভেল্কিবাজি কিংবা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা হাওয়া ভবনের প্রেতাত্মারা এক পা আগাবে তো দশ পা পিছাবে। সংগঠন না থাকলে ২০২১ এর আগস্টের ন্যায় বুকেও গুলি ছুড়তে দ্বিধা করবে না।
রাজনীতিতে যেমন খুশি তেমন সাজা যায় না। রাজনীতি একটা চলমান বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রতিনিয়ত শেখায় শিখতে হয়।
ঘরের মধ্যে ঘর না করে আসুন বরিশালে আমরা আমাদের অভিভাবক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ চাচার নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশরত্ন শেখ হাসিনার কর্মী হই।

জয় বাংলা,
জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক।। খন্দকার রাজু আহম্মেদ
বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের হতভাগ্য কর্মী।।

Share.
Exit mobile version