সু্ব্রত সরকার, মহম্মদপুর (মাগুরা)।। শীতের আগমনী হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাগুরার মহম্মদপুরে ঘোপ বাঁওড়ে শুরু হয়েছে অতিথি পাখির মেলা। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের ভোরে নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রতিদিন ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো বাঁওড় এলাকা, বদলে গেছে প্রকৃতি ও পরিবেশের রূপ।
শীত এলেই প্রতি বছরের মতো এবারও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে ঘোপ বাঁওড়ে। বিশাল জলাশয়ের বুকজুড়ে পাখিদের উড়াউড়ি, ডুবসাঁতার আর আহার সংগ্রহের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের। কেউ পানিতে ডুব দিয়ে খাদ্য শিকার করছে, আবার কেউ কচুরিপানার ওপর বসে নিচ্ছে অবসর। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলে তাদের খাদ্য সংগ্রহ ও খেলাধুলার মতো ব্যস্ততা।
সরজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখিরা যেন এখানে তৈরি করে নিয়েছে এক নিরাপদ অভয়ারণ্য। প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর ঘোপ বাঁওড় ইতোমধ্যে হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে আসছেন পাখিদের দেখার টানে। দূর থেকেই তারা উপভোগ করেন পাখির কলরব, মিতালী আর উড়াউড়ির অপূর্ব দৃশ্য—যা অন্যরকম এক অনুভূতি এনে দেয়।
এমন অনুভূতির কথা জানালেন স্থানীয় মৎস্য শিকারী মুকুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকে এখানে মাছ শিকার করছি। প্রতি শীতেই অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আমরা সারাবছর তাদের অপেক্ষায় থাকি। পাখি আর আমরা যেন মিলেমিশে থাকি। তাদের ঝাঁকে উড়াউড়ি, বিচিত্র স্বর, পানিতে নেমে আহার শিকার—সবকিছুই মন ভরে দেয়। শীত শুরু হলে আসে, শীত কমতেই আবার ফিরে যায়।”
অতিথি পাখির আগমন ঘোপ বাঁওড়কে শুধু সৌন্দর্যেই ভরিয়ে তুলছে না, বরং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শীতকাল জুড়ে এখানে অতিথি পাখির বিচরণ মহম্মদপুরবাসীর কাছে এক অনন্য প্রাকৃতিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।



