*বাড়ি তালাবদ্ধ দুইমাস, তবুও শত শত টাকার বিল
বরিশাল অফিস :- করোনার বিপর্যয়ের কারণে গত ২৭ মার্চ থেকে সরকারি ছুটির জন্য বিনা সুদে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল গ্রহণের সুযোগ রাখলেও বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো এখনও তা গ্রহণ করছে না। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ওজোপাডিকোর এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে চরম বিপাকে পরেছেন দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় পৌনে দুইলাখ বিদ্যুত গ্রাহক। এছাড়া অন্যান্য বিদ্যুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ভূতুরে বিলে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রমতে, দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টির মধ্যে পাঁচটি জেলা সম্পূর্ণ ও একটি জেলা আংশিক লকডাউনের আওতায় আসায় গত প্রায় দুইমাস ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বেকার হয়ে ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছে। সরকারিÑবেসরকারি বিভিন্ন ঋণদান প্রতিষ্ঠানের ঋণের কিস্তির আদায় স্থগিতসহ দুই মাসের জন্য সুদ মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকিং কার্যক্রম ধীরে ধীরে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত স¤প্রসারিত হলেও বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের বিল আদায়ে ব্যাংকগুলোকে সম্মত করাতে না পারায় গ্রাহকদের ওপর বাড়তি বোঝা চাঁপিয়ে দিতে শুরু করেছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করায় মার্চে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল এপ্রিল মাসেও দেয়া সম্ভব হয়নি। মে মাসে ওজোপাডিকোর পক্ষ থেকে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের বিদ্যুৎ মাসুল একত্রে পরিশোধ করার জন্য বিল দেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অনেক বাড়ি দুইমাস ধরে তালাবদ্ধ থাকলেও সেসব গ্রাহকদেরও দেড় থেকে দুইশ’ ইউনিটের টাকা দেবার ভূতুরে বিল দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর শিক্ষার্থীদের বসবাসের প্রায় সব মেস গত ২৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। সেখানে এপ্রিল মাসে শত শত ইউনিটের বিল দেয়া হয়েছে। অথচ মেসের আবাসিকরা দুইমাস ধরে বাসায় নেই। ফলে বাড়িওয়ালারা পরেছেন মহাবিপাকে। এছাড়াও চলমান অর্থনৈতিক সংকটে ওজোপাডিকো এক সাথে দুইমাসের বিদ্যুৎ বিল দেয়ায় গ্রাহকরা বিলের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে চরম বিপাকে পরেছেন।
পাশাপাশি ওজোপাডিকোর বিলে যেসব ব্যাংকের শাখায় পরিশোধ করার নির্দেশ রয়েছে তাদের কোনটিই বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ করছে না। বিকাশ বা অন্যসব অনলাইন কার্যক্রমে বিল পরিশোধ করতে গেলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। অথচ বিলে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে পরবর্তীতে ব্যাংক তা গ্রহণ করবে না। ফলে ওজোপাডিকোর হঠকারী সিদ্ধান্তে বিপাকে পরেছেন দক্ষিণাঞ্চলের পৌনে দুইলাখ বিদ্যুৎ গ্রাহক। একইভাবে বরিশালের গ্রামাঞ্চলেও পল্লী বিদ্যুত গ্রাহকদের বাড়িতে বিল লিখতে না গিয়ে ও বিলের কাগজ না দিয়েই ভূতুরে বিল করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধের জন্য তাদের (গ্রাহক) মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠানো হচ্ছে। এসব ভূতুরে বিল নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে পরেছেন বিদ্যুত গ্রাহকরা।